নিজস্ব প্রতিনিধি:
গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরীকে ঘিরে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। ঢাকায় তার গড়ে তোলা একটি বড় ধরনের অপরাধচক্রের তথ্য মিলেছে। জানা গেছে, এক প্রভাবশালী সচিবকে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা থেকে রক্ষা করতে দেড়শ কোটি টাকার চুক্তি করেছিলেন তিনি।
গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য উঠে এসেছে। তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এনায়েত করিম নিজেকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে স্বীকার করেছেন। তিনি ভারতের সহযোগিতায় বাংলাদেশে নতুন সরকার গঠনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন।
এনায়েতের অন্যতম সহযোগী গোলাম মোস্তফা আজাদকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়। তার জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তাদের দুজনের কার্যক্রমে দেশের দুই ডিআইজির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। এ ছাড়া সরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের তথ্য মিলেছে। যদিও দেড়শ কোটি টাকার চুক্তির অর্থ লেনদেনের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, মোস্তফা আজাদ একাত্তর টিভিতে জিএম অপারেশন হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং ৫ আগস্টের পর চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। তাকে মাসে দুই লাখ টাকা বেতনে সহকারী হিসেবে নিয়েছিলেন এনায়েত করিম। মোস্তফার মাধ্যমে তিনি টাকা বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতেন। এমনকি গুলশানের ফ্ল্যাট ভাড়ার খরচও দিতেন তিনি।
রাজধানীর মিন্টো রোডের মন্ত্রীপাড়ায় সন্দেহজনকভাবে গাড়ি চালানোর সময় শনিবার সকালে এনায়েতকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাকে আদালতে তোলা হয় এবং ৪৮ ঘণ্টার রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে আদালত আবারও পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একই মামলায় বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া মোস্তফা আজাদকেও আদালতে তোলা হয় এবং তারও পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, এনায়েত ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অবস্থান করেন এবং পরে গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে থেকে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে একাধিক গোপন বৈঠক করেন। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সরকারি-বেসরকারি নীতিনির্ধারক পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ করে তিনি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পাঠাতেন।