মনির হোসেন, সখিপুর উপজেলা প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী সরকারি সা’দত কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা, দোয়া ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবারের এ আয়োজনে কলেজ প্রাঙ্গণ শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের উচ্ছ্বাসে মুখরিত হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী সৈয়দ মামুনুল আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসিডিপির ডেপুটি প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর মিজানুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মনিরুজ্জামান মিয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রফেসর আশেকুল হাসান। এসময় উপাধ্যক্ষ প্রফেসর সুব্রত কুমার সাহা, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক আব্দুল্লাহ তালুকদার, যুগ্ম সম্পাদক আতিকুর রহমান এবং জেলা শিক্ষা প্রকৌশলী ইস্তিয়াক ইকবাল হিমেল উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্য
অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ মামুনুল আলম বলেন, “তোমাদের পরিশ্রম ও মেধাই আগামী দিনের আলোকবর্তিকা। কেবল জ্ঞান অর্জন নয়, দায়িত্ববোধ ও সততা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। আশাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে এবং ভালো কিছু করার ক্ষুধা সবসময় জাগ্রত রাখতে হবে।”
তিনি শিক্ষার মানোন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন এবং অবসরের আগে নিজ কলেজের জন্য বিশেষ কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এসময় তিনি জেলা শিক্ষা প্রকৌশলীকে কিছু জরুরি কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি
অনুষ্ঠানে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ও সা’দত কলেজ ডিবেটিং ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু আহমেদ শেরশাহ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করেন। এর মধ্যে রয়েছে—ছাত্র সংসদ নির্বাচন, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম সম্প্রসারণ, গ্রন্থাগার সমৃদ্ধকরণ, কলেজ সংলগ্ন পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা জোরদার, শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি ও টিউশন ফি মওকুফ বৃদ্ধি, পর্যাপ্ত বাস ও হোস্টেল নির্মাণ, দশতলা একাডেমিক ভবন ও গ্যারেজ নির্মাণ এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য মুক্তমঞ্চ তৈরি।
শিক্ষার্থী নেতৃত্বের বক্তব্য
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাবেক সিনিয়র সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন, সা’দত কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক রিমন হাসান, ছাত্রদলের সদস্য সচিব কামরুজ্জামান আকাশ, এবং ইসলামী ছাত্র শিবির সা’দত কলেজ শাখার সভাপতি টুটুল।
তাঁরা বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি পূরণ হলে শুধু সা’দত কলেজ নয়, গোটা জেলার শিক্ষাঙ্গনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।
সভাপতির সমাপনী বার্তা
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মনিরুজ্জামান মিয়া বলেন, “আজকের এই পুরস্কার শুধু সম্মান নয়, বরং আগামী দিনের দায়িত্বের প্রতীক। কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে সমাজ ও দেশের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা জানান, এই সম্মান তাঁদের আরও অনুপ্রাণিত করবে এবং বড় স্বপ্ন বাস্তবায়নে শক্তি যোগাবে।
সরকারি সা’দত কলেজ পরিবারের এই আয়োজন শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি করেছে। একইসঙ্গে ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের প্রত্যাশায় আশাবাদী হয়ে উঠেছে কলেজ অঙ্গন।