আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের লাদাখে বিক্ষোভ ও সহিংসতার জেরে কারফিউ জারি করেছে ভারত সরকার। বুধবার লেহ শহরে রাজ্যের মর্যাদা এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। ধীরে ধীরে তা সহিংস রূপ নিলে পুলিশি সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত এবং ৮০ জনের বেশি আহত হন। নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থল থেকে ৫০ জনকে আটক করেছে।
বৃহস্পতিবার ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন পুলিশ ও সিআরপিএফ সদস্য আহত হন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, লেহ অ্যাপেক্স বডি ও কারগিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের সঙ্গে সরকারের আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছিল। তবে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিছু ব্যক্তি সেই অগ্রগতি ভণ্ডুল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুক জনগণকে উসকে দিয়েছেন এবং নেপালের ‘জেন-জি’ আন্দোলন ও আরব বসন্তের উদাহরণ টেনে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।
সহিংসতার ঘটনায় বিক্ষোভকারীরা বিজেপি কার্যালয় ও হিল কাউন্সিলের দপ্তরে পাথর নিক্ষেপ করে। তারা নিরাপত্তা বাহিনীর একটি গাড়িসহ কয়েকটি যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয়। বিজেপি কার্যালয়ের আসবাবপত্র ও নথিপত্রও অগ্নিসংযোগে পুড়ে যায়।
বিক্ষোভকারীদের প্রধান দাবি, লাদাখকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা প্রদান এবং ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করা। এই দাবিতে গত চার বছর ধরে লেহ অ্যাপেক্স বডি ও কারগিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আন্দোলন চালিয়ে আসছে এবং একাধিকবার সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে।
অন্যদিকে, অনশনরত জলবায়ু কর্মী সোনম ওয়াংচুক বৃহস্পতিবার তার ১৫ দিনের অনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন এবং শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, ভারতের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো—ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম ও আসামের উপজাতি জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ প্রশাসনিক বিধান নিশ্চিত করে। এর আওতায় স্বায়ত্তশাসিত পরিষদ, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা, স্থানীয় সংস্থার ভূমিকা এবং আর্থিক ক্ষমতা নির্ধারিত হয়। আগামী ৬ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, লেহ অ্যাপেক্স বডি এবং কারগিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের মধ্যে পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।