মামুন, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজার: জেলার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয় ঘিরে চলছে দুর্নীতির উৎসব। প্রতিদিন শত শত সেবাপ্রত্যাশী অফিসে গেলেও কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়া যায় না। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি নির্ধারিত ফি দিলেই লাইসেন্স বা রেজিস্ট্রেশনের কাজ সম্পন্ন হয় না; দালাল বা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা না দিলে বছরের পর বছর ঘুরেও সমাধান মেলে না।
লাইসেন্স পেতে দীর্ঘ প্রতীক্ষা
স্থানীয় এক ভুক্তভোগী জানান, তিনি চার বছর আগে প্র্যাকটিক্যাল ও টেকনিক্যাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সম্পন্ন করেন। কিন্তু পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও হাতে পাননি লাইসেন্স। একাধিকবার অভিযোগ জানালেও কোনো ফল মেলেনি। তার ভাষায়—
“এখানে টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। দালালকে মোটা অঙ্কের টাকা দিলে এক সপ্তাহেই লাইসেন্স পাওয়া যায়, না দিলে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়।”
দালালদের প্রভাব সর্বত্র
অফিসের ভেতর-বাইরে সবসময় সক্রিয় থাকে দালালচক্র। লাইসেন্স নবায়ন থেকে শুরু করে গাড়ি রেজিস্ট্রেশন—প্রতিটি সেবায় তাদের প্রভাব বিস্তার রয়েছে। সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে তাদের শরণাপন্ন হচ্ছেন। ফলে সরকারি সেবার নামে গড়ে উঠেছে এক প্রভাবশালী অবৈধ সিন্ডিকেট।
লাইসেন্সবিহীন চালকের সংখ্যা উদ্বেগজনক
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, মৌলভীবাজার জেলায় প্রায় ৪৫ শতাংশ চালক বৈধ লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালাচ্ছেন। দুর্নীতি ও জটিল প্রক্রিয়াই এর মূল কারণ। এতে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে আশঙ্কাজনকভাবে।
জনমনে ক্ষোভ
সচেতন মহল বলছে, মৌলভীবাজার বিআরটিএ অফিসের দুর্নীতি এখন আর গোপন কিছু নয়। বছরের পর বছর মানুষ হয়রানির শিকার হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অথচ বিআরটিএ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর, যেখানে জনস্বার্থ রক্ষা ও সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা।
তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি
ভুক্তভোগীরা সরকারের উচ্চপর্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, মৌলভীবাজার বিআরটিএ অফিসের কার্যক্রমে দ্রুত তদন্ত করা জরুরি। একই সঙ্গে দালালচক্রকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা এবং ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
কর্তৃপক্ষের অবস্থান অজানা
এ সব বিষয় নিয়ে বিআরটিএ-এর সহকারী পরিচালকের (এডি) সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।