নিজস্ব প্রতিনিধি:
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করেছে, তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবছে।” সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তার এই বক্তব্য ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন পেজ ও ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে নাহিদ ইসলামের বক্তব্যের ভিডিও ও ফটোকার্ড শেয়ার করা হচ্ছে, যেখানে পক্ষে-বিপক্ষে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। শনিবার সন্ধ্যায় একাত্তর টেলিভিশনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই বিষয়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডে রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত ১২ হাজারের বেশি প্রতিক্রিয়া ও ১ হাজার ৪০০টি মন্তব্য করা হয়।
উল্লেখ্য, জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের সময় নাহিদ ইসলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক দফা দাবি জানান। অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে তিনি ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে উপদেষ্টা হন এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি পদত্যাগ করে এনসিপির আহ্বায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে একই সময়ে সরকারে যোগ দেওয়া মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এখনো উপদেষ্টা পদে রয়েছেন।
সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা কেউ সরকারের উপদেষ্টা হতে চাইনি। আমরা জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলাম। রাজনৈতিক শক্তি বা অভ্যুত্থানের শক্তি সরকারে না থাকলে অন্তর্বর্তী সরকার তিন মাসও টিকত না। প্রথম ছয় মাস সরকারকে উৎখাত বা প্রতিবিপ্লব করার নানান চেষ্টা চলমান ছিল, যা এখনো মাঝে মাঝে দেখা যায়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা অনেককে বিশ্বাস করে ভুল করেছি। আমাদের উচিত ছিল ছাত্র নেতৃত্বকেই শক্তিশালী করা এবং সরকারে গেলে সম্মিলিতভাবে যাওয়া। নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা যে বিশ্বাস করেছিলাম, সেই জায়গায় আমরা প্রতারিত হয়েছি। অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়েছে বা গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। সময় এলে আমরা তাদের নামও প্রকাশ করব।”
নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “অনেক উপদেষ্টা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে নিজেদের নিরাপদ প্রস্থানের চিন্তায় ব্যস্ত। তারা যদি বুঝত যে তাদের নিয়োগকর্তা হলো গণ-অভ্যুত্থানের শক্তি—রাজপথে নেমে জীবন দেওয়া ও আহত সাধারণ মানুষ, তাহলে তারা এভাবে পথভ্রষ্ট হতো না।”