মোঃ হাছান আল মামুন, দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বাজারে দুই সপ্তাহ পর আবারও জমে উঠেছে কেনাবেচা। পাহাড়ি-বাঙালি, ত্রিপুরা ও মারমা সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে ভিড় করছেন বাজারে। পাহাড়ের তাজা ফলমূল, সবজি, জুমের উৎপাদিত ফসল নিয়ে কৃষকরা বাজারে এসেছেন বিক্রির জন্য—দীর্ঘদিনের নীরবতার পর এখন যেন প্রাণচাঞ্চল্যে ভরে উঠেছে দীঘিনালা হাট।
সম্প্রতি খাগড়াছড়ি সদর এলাকায় মারমা এক কিশোরী ধর্ষণের ঘটনার পর জেলাজুড়ে সৃষ্টি হয় উত্তেজনা।
প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে খাগড়াছড়ি, দীঘিনালা, গুইমারা ও রামগড়সহ আশপাশের উপজেলাগুলোতে চলেছে হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে জেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে জনসমাবেশ সীমিত রাখার নির্দেশ দেয়।
অবশেষে গত ৫ অক্টোবর রাতে জুম্ম ছাত্র-জনতা হরতাল ও অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। পরদিন ৬ অক্টোবর ভোরে জেলা প্রশাসক এ.বি.এম ইফতেখার আহমেদ ১৪৪ ধারা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই স্বাভাবিক হতে শুরু করে জনজীবন, খুলে যায় দোকানপাট, ফেরে স্বস্তি ও স্বাভাবিকতা।
আজ মঙ্গলবার সকালে দেখা যায়, দীঘিনালা বাজারে উপচেপড়া ভিড়। পাহাড়ি-বাঙালি, ত্রিপুরা ও মারমা জনগোষ্ঠীর মানুষ কেনাকাটায় ব্যস্ত। হাসিমুখে কথা বলছেন, কেনাবেচা করছেন সবাই।বাজারে আসা স্থানীয় বাসিন্দা রয়েল ত্রিপুরা বলেন, “আমরা শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে সবাই মিলে থাকতে চাই।”
অন্যদিকে লাংশু মারমা বলেন, “অপরাধ যার, শাস্তিও তারই হওয়া উচিত। এখানে বিভেদ সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই। আমরা সম্প্রীতির বন্ধন ধরে রাখতে চাই।” দীর্ঘ দুই সপ্তাহের উত্তেজনার পর দীঘিনালা বাজারে আবারও স্বাভাবিকতা ফিরে আসায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। শান্তি ও সম্প্রীতির এই চিত্রই এখন পাহাড়ি জনপদের নতুন বার্তা হয়ে উঠেছে।