মোঃ আমিরুল হক, রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় শহীদ নামের এক যুবককে হত্যা মামলায় তার স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) বিকেলে রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জয়নাল আবেদীন আসামিদের অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) আব্দুর রাজ্জাক।
বিচারে দণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- পাংশা উপজেলার কাজিয়ালপাড়া গ্রামের জিয়া উদ্দিনের ছেলে সোহেল এবং শহীদ মণ্ডলের স্ত্রী রহিমা খাতুন। তবে রায় ঘোষণার সময় তারা দুজনই পলাতক ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৯ মার্চ থেকে ১০ মার্চ রাত ২টার দিকে জেলার পাংশা উপজেলার কাজিয়ালপাড়া গ্রামের জয়নাল মণ্ডলের ছেলে শহীদ মণ্ডলকে তার স্ত্রী রহিমা খাতুন ও তার পরকীয়া প্রেমিক সোহেল শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এ ঘটনায় শহীদ মণ্ডলের ভাই শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে সোহেলসহ অজ্ঞাতনামা পাঁচজনকে আসামি করে রাজবাড়ী ২ নম্বর আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি পাংশা মডেল থানায় করা রেকর্ড হয়। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রহিমা খাতুনকে গ্রেপ্তার করেন পুলিশ। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে রহিমা খাতুন জানান, বিয়ের আশ্বাসে তার পরকীয়া প্রেমিক সোহেলের কথামতো তিনি দুধের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে স্বামী শহীদ মণ্ডলকে খাওয়ান। পরে শহীদ ঘুমিয়ে পড়লে সোহেল ঘরে ঢুকে গামছা দিয়ে তার নাক-মুখ বেঁধে গলায় টিপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। সোহেল চলে যাওয়ার ১০ মিনিট পর রহিমা চিৎকার করে লোক জড়ো করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চাঞ্চল্যকর শহীদ মণ্ডল হত্যা মামলায় পরকীয়া প্রেমিক সোহেল ও স্ত্রী রহিমা খাতুনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।’