১৯শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৭শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

অনলাইন জুয়ার বদৈৗলতে এখন কোটিপতি: রাজবাড়ীতে ৭ বছরের চাকুরীতেই গ্রাম পুলিশের কোটি টাকার আলিসান “ইহজাগতিক ভিলা”

মোঃ আমিরুল হক, রাজবাড়ী প্রতিনিধি:

অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে নিঃস্ব হচ্ছে তরুন সমাজ। আবার কেউ কেউ অনলাইন জুয়া পুঁজি করে গ্রাম পুলিশের ৭ বছরের চাকুরীতেই শুন্য থেকে কোটিপতি বনে গেছে এক গ্রাম পুলিশ। চায়ের দোকান থেকে গ্রাম পুলিশ, বিকাশ ব্যবসায়ী, হাট-ইজারাদার, কেমিক্যাল ফ্যাক্টারী, ইন্টারনেট ও ডিস লাইনের ব্যবসা, গরুর খামার সহ গড়ে তুলেছেন কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা। বাড়ীতে গড়ে তুলেছেন কোটি টাকা ব্যায়ে আলিসান ভবন। এ যেন আলাদিনের প্রদীপ পেয়েছেন গ্রাম পুলিশ । এখন সময় না পাওয়ার অজুহাতে ইউনিয়ন পরিষদে ডিউটি করে না। তাকে কয়েকবার নোটিশ দিয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান। এ গ্রাম পুলিশের নাম মোঃ শহিদুল শেখ (২৫)। তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার সাদিপুর গ্রামের চায়ের দোকানী শাহজাহান শেখের ছেলে ও শহীদওহাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ।

তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে, গ্রাম পুলিশ শহিদুল শেখ বেশিদুর লেখাপড়া করতে পারেনি। পাশের কুঠিরহাট বাজারে সরকারী খাস জমিতে বাবার সাথে চায়ের দোকান শুরু করে। এরই মধ্যে ২০১৮ সালে শহীদওহাবপুর ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম পুলিশের চাকুরী হয়। এরই মধ্যে করোনাকালীন সময়ে বিকাশ ব্যবসার পাশাপাশি অনলাইন ওয়ান এক্স বেড জুয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এ জুয়ার মাঠ থেকে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কৌশলে হাতিয়ে নেয় অর্থ। একে একে গড়ে তোলেন রাজবাড়ী জেলখানার পাশে কেমিক্যাল কারখানা, ১৬ লাখ টাকার ইন্টারনেট ব্যবসা, ডিসলাইনের ব্যবসা, ৫০টি গরুর খামার, ১৪ লাখ টাকায় কুঠিরহাট বাজার গরু হাট ইজারাসহ বিভিন্ন ব্যবসা শুরু করেন। ৩০ লক্ষ টাকার কৃষি জমি ক্রয় করেছেন। সেই পুরণে চায়ের দোকান এখন ভাড়া দিয়েছেন খোরশেদ শেখের নিকট। সাদিপুর গ্রামে কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মাণ করেছেন দ্বিতল বিশাল আকৃতির ভবন। ডেকোরেটর কর্মচারী ভাই জাহিদকে করে দিয়েছেন ডেকোরেটরের দোকান।

কুঠিরহাট বাজারের কয়েকজন চায়ের দোকানী নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, সামান্য চায়ের দোকান করে এতো টাকার মালিক কিভাবে সম্ভব। আমরা চায়ের দোকান করে সংসার পরিচালনা করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। আর শহিদুল কোটি টাকা খরচ করে আলিসান বাড়ী সহ কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করছে। বিষয়টি তদন্ত করে খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করি।

শহীদওহাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ ভুঁইয়া বলেন, গ্রাম পুলিশ শহিদুল শেখ দীর্ঘদিন পরিষদে আসে না, কাজও করে না। তাকে শোকজ করা হয়। পরবর্তী কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

গ্রাম পুলিশ মোঃ শহিদুল শেখের দাবী তিনি চায়ের দোকান থাকাবস্থায় বিকাশের ব্যবসা করতেন। করোনাকালীন সময়ে অনলাইন জুয়ার মাঠ নয় নিজেই অনলাইন জুয়া খেলতেন। আগে থেকেই ডিসলাইনের ব্যবসা ছিল। বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবসা, কেমিক্যাল ফ্যাক্টারী, কুঠিরহাট বাজারের গরুর হাটে ১৪ লক্ষ টাকার শেয়ার রয়েছে। ৯শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন। ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করে বাড়ী নির্মাণ করেছেন। তবে এখন অনেক টাকা দেনা রয়েছেন। তার স্ত্রী অনলাইনে কাথায় ব্যবসা করেন। গত ২ বছর আগে আয়কর ফাইল খুলেছেন। আগে শুন্য রিটার্ণ থাকলেও এখন কিছু টাকা দেখিয়েছি। ব্যবস্ততার কারণে গ্রাম পুলিশের চাকুরীর ডিউটি করতে পারেন না। এখন চাকুরী ছাড়তে চাই। কিভাবে ছাড়বো বুঝতে পারছি না। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শোকজ করেছিল, তার জবাব দিয়েছি।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারিয়া হক বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top