মোঃ রাকিবুল ইসলাম, রাজশাহী প্রতিনিধি:
রাজশাহী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীর অভিযোগ — সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি। রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার কাঠালবাড়ীয়া এলাকায় যুবদল কর্মী মানিকের লিজ নেওয়া পুকুরে মাছ লুট ও পরদিন তার ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মানিক আজ ১৯ অক্টোবর (রবিবার) সকাল ১১টায় রাজশাহী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে মানিক জানান, তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল দুর্গাপুর উপজেলা শাখার একজন সক্রিয় কর্মী। গত ১৬ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে পৌর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম ও সদস্য সচিব রিপন কয়েকজন জেলেকে সঙ্গে নিয়ে তার লিজকৃত পুকুরে প্রবেশ করে মাছ লুট করেন। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে উত্তেজিত জনতা তাদের ধাওয়া করে ধরে ফেলে। পরে মানিক ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে অভিযুক্তদের উদ্ধার করে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন।পরে ৫নং ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও কিছু নেতাকর্মীর হস্তক্ষেপে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত মীমাংসার আশ্বাসে দুজনকে তাদের জিম্মায় দেওয়া হয়।
পরের দিন ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় কাঁঠালবাড়ীয়া বাজার থেকে বাসায় ফেরার পথে শ্রমিক দলের আহ্বায়কের ছেলে সোয়াদ, সহযোগী করিম ও সজীব দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মানিকের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনি প্রাণে রক্ষা পান ঠিকই কিন্তু পুরো পরিবার তাদের ভয়ে বাসা থেকে বের হতে পারছে না।
মানিক অভিযোগ করেন, “আমার পুকুরে মাছ লুট ও হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে অভিযুক্তরা ১৮ অক্টোবর দুর্গাপুর হাট মাঠে এক সংবাদ সম্মেলন করে উল্টো আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলে।”
অভিযুক্তদের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মানিক নাকি তাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করছিলেন এবং পুকুরটি তারা প্রদীপ বাবুর কাছ থেকে কিনেছেন। এ বিষয়ে মানিক বলেন, “এই বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমি ওই পুকুরটি সায়বাড় গ্রামের মৃত তাহের উদ্দিনের ছেলে আলিমুদ্দিনের কাছ থেকে প্রতি বিঘা ৫০ হাজার টাকা হারে ৭৮ শতক জমি নিয়মিত লিজ নিয়ে মাছ চাষ করে আসছি। আমি কখনো পুকুরের মালিকানা দাবি করিনি, কেবল পানি লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “প্রায় ১৫-২০ দিন আগে কালাম ও রিপন এসে বলে পুকুরটি প্রদীপ বাবুর নামে কাগজপত্র আছে। আমি তখন তাদের বলি, কাগজ দেখান—যদি সত্য হয়, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আমি মাছ তুলে নেব। কিন্তু তারা কোনো কাগজ দেখায়নি। বরং ১৬ অক্টোবর রাতে জেলেদের নিয়ে এসে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে।”
ঘটনার পরের দিন মানিকের ওপর পুনরায় হামলার ঘটনায় তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমার উপর হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা ও পুকুরে মাছ লুটের ঘটনায় উল্টো আমাকে অভিযুক্ত করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। আমি গণমাধ্যম ও প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি—ঘটনাটি যেন সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হয়।”
মানিক আরও বলেন, “এটি শুধু আমার ওপর হামলা নয়, একজন রাজনৈতিক কর্মীর ওপর পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। আমি আমার ক্ষতিপূরণ ও ন্যায়বিচার চাই।”
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, ঘটনাটির পর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।