২০শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৮শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

‎প্রেমিকার শরবতে প্রবাসীকে হত্যার চেষ্টা, প্রেমিকা-স্বামীসহ তিনজন গ্রেপ্তার

আহসান কবির, ‎সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নে  শরবতে বিষ মিশিয়ে শাফিউল হক (৩৫) নামে এক প্রবাসীকে হত্যার চেষ্টা করা হয় । মৃত ভেবে একটি স্থাণীয় সুজন মিয়ার নির্মানাধীন ফার্মের মাঝে রেখে যায় ।  পরের দিন সকালে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সাঘাটা হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে  এবং ঘটনায় প্রেমিকা , স্বামী ও ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে   বলে শনিবার সকালে সাঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাদশা আলম নিশ্চিত করেন।

‎পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার কাইম্যার ঘোনা গ্রামের মৃত গোলাম কবিরের ছেলে শাফিউল হক দীর্ঘ ২১ বছর ধরে সৌদি আরবে কর্মরত। ২০২০ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিগো লাইভ (BIGO Live) অ্যাপের মাধ্যমে সাঘাটা উপজেলার কচুয়া গ্রামের সুরাইয়া আক্তার মৌ-এর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং ভিডিও কলে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

‎থানায় লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রেমিকার পরামর্শে শাফিউল তার নামে ছয় শতাংশ জমি ক্রয় করে সেখানে একটি ঘর ও গরুর ফার্ম নির্মাণ করেন। বিদেশে অবস্থান কালেই তিনি প্রায় ৫০ লাখ টাকা পাঠান বলে দাবি করেন। এ নিয়ে সাঘাটা থানায় একটি মামলাও রয়েছে।

‎ভুক্তভুগী প্রবাসী শাফিউল হক  জানান, এক বছর আগে জানতে পাড়ি মুসলিম সম্প্রদায়ের মেয়ে সুরাইয়া আক্তার মৌ  বিবাহিত। তার স্বামী হিন্দু সম্প্রদায়ের  দিপু রানা। এরপর থেকেই তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

‎চলতি বছরের ১০ আগস্ট আমি দেশে এসে বিষয়টি মীমাংসার জন্য দেখা করতে গেলে তারা আমাকে বাড়িতে ডেকে নেয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মৌ, তার স্বামী দিপু রানা ও ছোট ভাই নয়ন। কথা বলার একপর্যায়ে মৌ আমাকে শরবত দেয়। শরবত খাওয়ার কিছুক্ষণ পর আমি অচেতন হয়ে পড়ি। পরে কি হয় জানিনা চোখ খুলে দেখি হাসপাতালে।

‎এ ঘটনার পর স্থানীয়রা মানিকগঞ্জ বাজার সংলগ্ন এক ফার্মঘরের পাশে থেকে অচেতন অবস্থায় শাফিউলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

‎এ বিষয়ে প্রবাসীর মামা আবু তালেব বলেন, পরিকল্পিতভাবে আমার মামাকে ডেকে নিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। মৃত ভেবে একটি স্থাণীয় সুজন মিয়ার নির্মানাধীন ফার্মের মাঝে রেখে যায় । আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

‎অভিযুক্ত সুরাইয়া আক্তার মৌয়ের মা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা এসব কিছুই জানি না। টাকার ব্যাপারে বলতে পারি না। আমার মেয়ে বিগো অ্যাপে যা টাকা কামাই করেছে, সেই টাকা কই গেল।

‎সাঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাদশা আলম যানায়, প্রবাসী শাফিউল হকের দায়ের করা মামলায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন প্রেমিকা সুরাইয়া আক্তার মৌ, তার স্বামী দিপু রানা ও ভাই নয়ন। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে পাঠানো হয়েছে। প্রবাসী সুস্থ হলে আদালতের নির্দেশে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top