২৬শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৪ঠা জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

দুই বছরে ৫০৬টি হারানো মোবাইল উদ্ধার করে আলোচনায় মুরাদনগরের এএসআই শামীম আহমেদ

মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি :

কুমিল্লার মুরাদনগর থানায় কর্মরত উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. শামীম আহমেদ এখন সেবাধর্মী ও মানবিক পুলিশ সদস্যের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত দুই বছরে তিনি উদ্ধার করেছেন মোট ৫০৬টি হারানো মোবাইল ফোন, যা প্রকৃত মালিকদের হাতে পৌঁছে দিয়ে সৃষ্টি করেছেন এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর মুরাদনগর থানায় যোগদানের পর থেকেই শামীম আহমেদ তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে একের পর এক হারানো মোবাইল উদ্ধার করে মালিকদের হাতে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। তার এ উদ্যোগে শুধু ভুক্তভোগীরাই নয়, স্থানীয়রাও প্রশংসা করছেন আন্তরিকভাবে।

হারানো মোবাইল ফেরত পাওয়ার পর অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এএসআই শামীমের প্রতি। তার এই নিরলস প্রচেষ্টা মানুষকে নতুন করে পুলিশের প্রতি আস্থা ও ভরসা জোগাচ্ছে।

ধামঘর এলাকার মোবাইল হারানো ভুক্তভোগী সায়েদুল ইসলাম সরকার বলেন, দুই মাস আগে আমার মোবাইলটি হারিয়ে যায়। পরে ফেসবুকে দেখি শামীম স্যার হারানো মোবাইল মালিকদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। যোগাযোগ করার পর তিনি আমাকে থানায় ডায়েরি করতে বলেন। প্রায় আড়াই মাস পর আমার মোবাইলটি তিনি উদ্ধার করে আমাকে ফেরত দেন। এমন সেবা সত্যিই অবিশ্বাস্য।”

অন্যদিকে কাজিয়াতল গ্রামের ফাতেমা আক্তার জানান, আমি কখনও ভাবিনি হারানো মোবাইল ফিরে পাওয়া সম্ভব। কিন্তু শামীম স্যারের প্রচেষ্টায় প্রায় সাড়ে চার মাস পর আমার ফোনটি ফিরে পেয়েছি। এটা আমার কাছে এক অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা।

শুধু মোবাইল উদ্ধার নয়, শামীম আহমেদ নিয়মিত নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে হারানো জিনিসপত্র উদ্ধার ও আইনি পরামর্শ বিষয়ে পোস্ট করেন। যেমন— পাসপোর্ট, ব্যাংক চেক, জাতীয় পরিচয়পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্স হারালে করণীয় কী— এসব বিষয়ে সচেতনতামূলক পোস্টের মাধ্যমে মানুষকে সহায়তা করছেন তিনি।

এএসআই শামীম আহমেদ বলেন, মানুষের অসাবধানতা বা চুরির কারণে প্রতিনিয়ত অনেক মোবাইল হারিয়ে যায়। আমরা প্রযুক্তির সহায়তায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসব ডিভাইস উদ্ধার করি। প্রথম দিন এক মালিকের হাতে হারানো ফোন ফেরত দেওয়ার সময় তার চোখে যে আনন্দ দেখেছি, সেটাই আমাকে এ কাজের প্রতি আরও অনুপ্রাণিত করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমি পুলিশে যোগ দিয়েছি মানুষের সেবা করার লক্ষ্য নিয়ে। যতদিন দায়িত্বে আছি, মানুষের জান-মাল ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাব।”

মুরাদনগরের সাধারণ মানুষ বলছেন, “মানবিক পুলিশ অফিসার” হিসেবে এএসআই শামীম এখন তাদের কাছে আস্থার আরেক নাম।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top