নিজস্ব প্রতিনিধি:
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে ভারত সরকারকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। শুক্রবার দিল্লিস্থ বাংলাদেশ মিশন থেকে পাঠানো এই চিঠির বিষয়টি রোববার নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তিনি জানান, “শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফেরত চেয়ে ভারতের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।” চিঠিটি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দেওয়া হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর প্রত্যর্পণ দাবি জোরদার
১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা ও কামালকে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেন। সে দিনই সচিবালয়ে প্রতিক্রিয়ায় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ঘোষণা দেন ভারতকে নতুন করে অনুরোধ পাঠানোর।
পরদিন আবার তিনি জানিয়ে বলেন— “মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় ভারত এখন বাড়তি দায়িত্বে রয়েছে। তাই তাদের ফেরত পাঠাতে আমরা চিঠি দিচ্ছি।” এর পরের দিনই দিল্লিতে চিঠি পাঠানো হয়।
ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন হাসিনা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর থেকে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন বলে সরকারি সূত্র জানায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ১৭ নভেম্বরও জানায়— মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের আশ্রয় দেওয়া হবে “অবন্ধুসুলভ আচরণ” এবং “ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞা”।
প্রত্যর্পণ চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দিল ঢাকা
দিল্লিকে পাঠানো চিঠিতে দুই দেশের বিদ্যমান প্রত্যর্পণ চুক্তির বাধ্যবাধকতা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য—
“উভয় দেশের মধ্যে কার্যকর প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ফেরত পাঠানো ভারতের অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব।”
ভারতের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই এখন পর্যন্ত
বিবিসি জানিয়েছে, অতীতেও বাংলাদেশের কয়েকটি অনুরোধের কোনো ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেয়নি ভারত। এবারও চিঠির জবাব এখনো পাওয়া যায়নি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনও সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন— “বাংলাদেশ নিয়মিতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছে, তবে ভারতের পক্ষ থেকে এখনো কোনো ইতিবাচক জবাব আসেনি।”