মোঃ আমিরুল হক, রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় ভোক্তার স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশপাশের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক–ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এহসানুল হক শিপন।
এসময় সাথে ছিলেন বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার “ডাক্তার সজল কুমার সোম, উপজেলা সেনেটারী ইন্সপেক্টর পনিরুজ্জামান পনির সহ সহোযোগিতায় ছিলেন বলিয়াকান্দি থানা পুলিশ ।
অভিযান সূত্রে জানা যায়,পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার ঘাটতি,নোংরা পরিবেশে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা,যথাযথ নিয়ম ও প্রটোকল না মেনে চিকিৎসা/রোগ নির্ণয় না করা,প্রতারণামূলক সেবার অপরাধে ৪টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে জরিমানা করা হয়।সেবা মেডিকেল ডায়াগনস্টিক সেন্টার,পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার,,বালিয়াকান্দি ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিরাময় ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার,প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১,হাজার টাকা করে মোট ৪,হাজর টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং ভবিষ্যতে আইন মেনে সেবা না দিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সতর্কবার্তা প্রদান করা হয়।
মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এহসানুল হক শিপন বলেন,“যথাযথ নিয়ম না মেনে নোংরা পরিবেশে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান সম্পূর্ণ বেআইনি এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এমন অভিযান নিয়মিতভাবে চলবে।”
সতর্ক করা হয়, মোবাইল কোর্টের এই ধরনের অভিযানে মূলত নিম্নোক্ত আইনগুলোর বিধান প্রয়োগ করা হয়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯, ধারা ৫৩: ভোক্তাকে প্রতারিত করা বা ভুল তথ্য দিয়ে সেবা প্রদান করলে জরিমানার বিধান রয়েছে।ধারা ৫১: মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সেবা বা পরিবেশে কার্যক্রম পরিচালনা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনা নীতিমালা, ২০১৮।লাইসেন্স ছাড়া বা লাইসেন্স নবায়ন ছাড়া পরিচালনা করলে প্রশাসন জরিমানা ও সিলগালা করার ক্ষমতা রাখে।
প্রতিটি ক্লিনিকে ডাক্তার, টেকনোলজিস্ট, পরিচ্ছন্নতা ও সেফটি ব্যবস্থাপনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। দণ্ডবিধি, ১৮৬০ – ধারা ২৬৮ / ২৮৯ (জনস্বাস্থ্যে ঝুঁকি সৃষ্টি) নোংরা পরিবেশে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা জনদুর্ভোগ ও হুমকি সৃষ্টি হিসেবে শাস্তিযোগ্য।মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর আইন অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাৎক্ষণিকভাবে বিচার, জরিমানা ও নির্দেশনা দিতে পারেন।
স্থানীয় সুশিল সমাজ, সাধারণ মানুষ এবং সৎ ব্যবসায়ীরা অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবিনোংরা ও অনিয়মের কারণে রোগীরা প্রতারিত হচ্ছেন,ভুল রিপোর্ট বা তদারকির অভাবে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়ছে।তারা নিরাপদ চিকিৎসা ব্যাবস্থা নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসনের এ ধরনের অভিযান আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর মান নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত মনিটরিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।রোগীদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ক্লিনিক–ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে আইন মেনে চলতে হবে।অনিয়ম অব্যাহত থাকলে সিলগালা, লাইসেন্স বাতিলসহ কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”