মোঃ হাসান আল মামুন, দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালায় নেমে এসেছে ভারী শীতের আমেজ। ভোরের আলো ফোটার আগেই ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে জনপদ, পাহাড় আর পথঘাট। কুয়াশার চাদরে মোড়া এই শীতের সকাল যেন বদলে দিয়েছে মানুষের জীবনযাত্রা। এরই সঙ্গে জমে উঠেছে দীঘিনালার ফুটপাতজুড়ে শীতের বিশেষ মেলা।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফুটপাতের দোকানগুলোতে চলছে শীতের পোশাকের বেচাকেনার উৎসব। লেপ, কম্বল, টুপি, মাফলার, হাতমোজা—সব ধরনের শীতবস্ত্রের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবারের শীতে আগেভাগেই দোকানে ভিড় বেড়েছে, তাই বিক্রিও হচ্ছে ভালো। শীত যতই বাড়ছে, হাসি ফুটছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মুখে।
শুধু পোশাক নয়, শীতকে কেন্দ্র করে প্রাণ ফেরেছে পিঠার দোকানগুলোতেও। গ্রামের মোড়ে মোড়ে অস্থায়ীভাবে উঠেছে ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, দুধ-চিটা, পাটিসাপটা সহ নানা রকম দেশি পিঠার দোকান। ভোরের কুয়াশা ভেজা ঠান্ডা সকালে ধোঁয়া ওঠা গরম পিঠার ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়তেই থমকে দাঁড়াচ্ছেন পথচারীরা। অফিসগামী, স্কুলপড়ুয়া, রিকশাচালক—সবার হাতেই দেখা যায় গরম ভাপা পিঠা কিংবা চিতই পিঠার প্লেট।
এই অস্থায়ী দোকানগুলো স্থানীয় নারীদের জন্যও তৈরি করেছে নতুন কর্মসংস্থান। অনেকে ঘরে তৈরি পিঠা এনে বিক্রি করছেন, আবার কেউ সরাসরি দোকান পরিচালনা করে সংসারে আনছেন বাড়তি আয়। ফলে শীত শুধু আনন্দই নয়, এনেছে জীবিকার নতুন সম্ভাবনাও।
দীঘিনালায় কয়েকদিন ধরেই অনুভূত হচ্ছে ভারী শীত। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডার তীব্রতা বেড়ে গিয়ে সকাল পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকে ঘন কুয়াশা। কুয়াশায় হাতের দূরত্বও যেন দেখা যায় না। স্থানীয়দের ভাষায়—“এবার শীতটা বেশ জোরে পড়ছে।” স্কুলগামী সন্তানদের গায়ে কম্বল জড়িয়ে বের করতে হচ্ছে, আর শ্রমজীবী মানুষেরা সকালবেলাতেই জ্বালাচ্ছেন আগুন।
শীত, কুয়াশা, পিঠার ঘ্রাণ আর জমজমাট ফুটপাত—সব মিলিয়ে দীঘিনালার সকাল এখন এক বিশেষ উৎসবমুখর পরিবেশ ধারণ করেছে। ভারী শীতের মধ্যে মানুষের এই প্রাণচঞ্চল সকালের দৃশ্য যেন প্রকৃতির কাছ থেকে পাওয়া উপহার।