ইমতিয়াজ উদ্দিন, জবি প্রতিনিধি:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো আনুষ্ঠানিক ও স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক নির্বাচন-২০২৫। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় চুয়াডাঙ্গা জেলার শিক্ষার্থীরা বিপুল উৎসাহে অংশগ্রহণ করেন।
সারাদিনব্যাপী শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার রাতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এই নির্বাচনকে শিক্ষার্থীরা দেখছেন সংগঠনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হিসেবে যেখানে নেতৃত্ব বাছাই হবে ভোটের মাধ্যমে, আর সিদ্ধান্ত হবে সকল সদস্যের সম্মিলিত অংশগ্রহণে।
নির্বাচনি পরিবেশ ছিল উৎসবমুখর, দায়িত্বশীল এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ। সভাপতি পদে সজিব হোসেনের জয় সভাপতি পদে দুই প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মো. সজিব হোসেন ৮৯ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মো. হাসানুজ্জামান পেয়েছেন ২৩ ভোট।
নিজের প্রতিক্রিয়ায় সজিব বলেন, “শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা আমাকে আরও দায়িত্বশীল করবে। সকলকে সাথে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলার শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করতে চাই সাধারণ সম্পাদক পদে সবচেয়ে বেশি ভোটে বিজয় তরিকুল ইসলাম তিন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে মো. তরিকুল ইসলাম ব্যাপক ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ৯১ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এসপি প্রদীপ পেয়েছেন ১৬ ভোট এবং মো. আরিফুল ইসলাম পেয়েছেন ৫ ভোট। বিজয়ী তরিকুল বলেন, “এটি শুধু ব্যক্তিগত অর্জন নয়, পুরো চুয়াডাঙ্গা জেলার শিক্ষার্থীদের জয়।
ঐক্যবদ্ধ থেকে সংগঠনকে আরও গতিশীল করবো।” সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রেদওয়ান ইসলামের অগ্রগামী বিজয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মো. রেদওয়ান ইসলাম পেয়েছেন ৭১ ভোট, আর কামরান সিদ্দিকী ইমরোজ পেয়েছেন ৪১ ভোট। দায়িত্ব পাওয়ার পর রেদওয়ান বলেন, “প্রথম বারের মতো নির্বাচন হওয়ায় জেলা কল্যাণ আরো সু সংগঠিত হবার রাস্তা পেলো” অফিস সম্পাদক পদে ইসমাইল হোসেনের বড় জয় অফিস সম্পাদক পদে ইসমাইল হোসেন পেয়েছেন ৯১ ভোট, আর সাদিকা ইসলাম দিশা পেয়েছেন ২১ ভোট।
তিনি বলেন, “অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমকে আরও সুদৃঢ় করতে কাজ করবো।” অর্থ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে সুইটের জয় অর্থ সম্পাদক পদে ঘনিষ্ঠ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শব্বির আহমেদ সুইট পেয়েছেন ৬২ ভোট, এবং অন্তর হালদার পেয়েছেন ৫০ ভোট। জয়ের পর সুইট বলেন, “স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সততার সঙ্গে আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করবো।” প্রচার সম্পাদক পদে সর্বোচ্চ ভোটে তাশরিফ আহমেদের বিজয় সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পদগুলোর একটি ছিল প্রচার সম্পাদক। সেখানে তিনজন প্রার্থী লড়াই করেন। ফলাফলে তাশরিফ আহমেদ পেয়েছেন ৯৪ ভোট, যা এই নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মনায়েম কবির শিহাব পেয়েছেন ১০ ভোট এবং এসরাফিল হোসেন শান্ত পেয়েছেন ৮ ভোট।
তাশরিফ বলেন, “সংগঠনের প্রচারণা ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করবো।” নির্বাচনের পরিবেশ: অংশগ্রহণে ভরপুর, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর নির্বাচন পরিচালনা কমিটি জানায়, পুরো ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া ছিল শান্তিপূর্ণ, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং অংশগ্রহণমূলক। শিক্ষার্থীদের সার্বিক অংশগ্রহণে এই নির্বাচন একটি নতুন উদাহরণ হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
একজন উপদেষ্টা বলেন, “এটি শুধু নির্বাচন নয়; এটি নেতৃত্ব নির্বাচন করার পাশাপাশি দায়িত্ব, স্বচ্ছতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চার একটি বড় অর্জন।” নতুন কমিটির প্রতিশ্রুতি: ঐক্য, উন্নয়ন ও দায়িত্বশীলতা বিজয়ী সকল সদস্য চুয়াডাঙ্গা জেলার শিক্ষার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন—
• সংগঠনকে আরও শৃঙ্খলায় আনতে কাজ করবেন
• শিক্ষার্থীদের একাডেমিক, সামাজিক ও ব্যক্তিগত সমস্যায় পাশে থাকবেন
• মেধা উন্নয়ন, ক্যারিয়ার সহায়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হবে
• স্বচ্ছতা, সৌহার্দ্য ও ঐক্য বজায় রাখা হবে এই নির্বাচন চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের আশা এই নেতৃত্ব সংগঠনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং জেলার শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে মূল্যবান ভূমিকা রাখবে
