১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

নান্দাইলে মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে টানা অনুপস্থিতি ও অবৈধ নিয়োগের অভিযোগ

মোঃ শহিদুল ইসলাম পিয়ারুল,ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার কাদিরাবাদ আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকা, অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ায়, স্বেচ্চাচারিতা ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের নানা অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়া মাদরাসার বার্ষিক পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়েও তিনি অনুপস্থিত রয়েছেন। এসব অনিয়ম উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ ও বেতন-ভাতার সরকারি অংশ বন্ধের দাবিতে রোববার (৩০ নভেম্বর) উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতার নাতি মো. মঞ্জুরুল হক।

সরজমিন পরির্দশনে জানাগেছে, ১৯৫০ সনে প্রতিষ্ঠিত কাদিরাবাদ আলিম মাদ্রাসার বর্তমান অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজের স্বেচ্চাচারিতা ও গাফিলতির কারণে প্রতিষ্ঠানটির বেহাল দশা। এমনকি দীর্ঘ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ছাড়াই চলছে এর কার্যক্রম।

অভিযোগে সূত্রে জানাগেছে, ১লা সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ সালে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে উচ্চ আদালত ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দায়ের করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা মো. মঞ্জুরুল হক।

যেখানে ১৯৯৫ এর নিয়োগ বিধি অনুসারে অধ্যক্ষের কাম যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার অভাব সহ অর্থ আত্মসাতের নানা অভিযোগ রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্ব পরির্দশক নাদিয়া মাহমুদ স্বাক্ষরিত শোনানীর নোটিশ করলেও অধ্যক্ষ উপস্থিত হননি। এদিকে গত ২৭ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে বিচারপতি ফয়জে আহাম্মদ ও বিচারপতি মঞ্জুর আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ বাদীর (মঞ্জুরুল হক) পক্ষে রায় প্রদান করেন।

এছাড়া গত ৪ঠা নভেম্বর তারিখ থেকে টানা অদ্যাবধি পর্যন্ত তিনি মাদ্রাসায় অনুপস্থিত রয়েছেন। অথচ তিনি ৫ ও ৬ নভেম্বর দুই দিনের জন্য ছুটির দরখাস্ত করেছিলেন। কিন্তু মাদরাসায় বার্ষিক চূড়ান্ত পরীক্ষা চলমান থাকলেও তিনি প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থেকেও অধ্যক্ষ বেতনভাতা উত্তোলনের পাঁয়তারা করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা দাতা সদস্যের পুত্র মোশারফ হোসেন ও শিক্ষক আ: মোনায়েম জানান, অধ্যক্ষের সে¦চ্চাচারিতা ও গাফিলতির অভাবে দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠানটির অবস্থা নাজুক। অভিযোগকারী মো. মঞ্জুরুল হক বলেন, “হাইকোর্টের রায় এবং প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অমান্য করে দিনের পর দিন অধ্যক্ষ অনুপস্থিত। পরীক্ষার সময়ও তিনি নেই। প্রশাসনের নিকট তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা এবং বেতন বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।”

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আব্দুল আজিজ প্রথমে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা পায়ের হাড় ভেঙ্গে গেছে, পরে বলেন হাড় ক্ষয়রোগে ভোগছেন। তবে প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ও নাজুক অবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, চাকুরী নেওয়ার পূর্ব থেকেই সাইনবোর্ড ছিলনা। এখন ডিসেম্বরে মেয়াদ শেষ। যারা আসবে তারা করবে। এ বিষয়ে আর কথা বলতে চাইনা, বলে কল রেখে দেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ভূইয়া জানান, “ওই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠানটির নাজুক অবস্থা, শীঘ্রই আবার পরির্দশনে যাবো। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা জান্নাত তিনি অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।

এ বিষয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্ব পরির্দশক নাদিয়া মাহমুদ বলেন, “ অভিযোগের প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষের নিকট একটি নোটিশ করেছি, কিন্তু উনি শোনানীতে আসেননি বা কোন লিখিত জবাব দেননি। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top