১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

নীলফামারীতে শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে বন্ধ পরীক্ষা, বিপাকে শিক্ষার্থীরা

মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি:

পেশাগত মর্যাদা ও বেতন–ভাতা সংশ্লিষ্ট চার দফা দাবিতে সরকারের সাড়া না পেয়ে দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আজ সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন। আন্দোলনের প্রথম দিনেই নীলফামারী জেলার শিক্ষার্থীদের পড়তে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে।

আজ সকাল থেকে নীলফামারী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং ডোমার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্ধারিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও কর্মবিরতির কারণে তা বাতিল হয়। প্রস্তুতি নিয়ে কেন্দ্রে এসে পরীক্ষা দিতে না পেরে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছে শিক্ষার্থীরা।

পরীক্ষার্থী ফারজানা মীলা কবির ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘শীত উপেক্ষা করে আমরা সকালে কেন্দ্র পর্যন্ত এলাম। এসে জানানো হলো পরীক্ষা হবে না। এটা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য বড় ক্ষতি। সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করি।’

এর আগে গতকাল সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দীর্ঘদিন ধরে পেশাগত মর্যাদা ও ন্যায্য বেতন–ভাতা নিশ্চিতের দাবি জানানো হলেও বাস্তবায়িত হয়নি। দুই দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচির পরও ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় শিক্ষকরা আজ থেকে দেশব্যাপী লাগাতার কর্মবিরতি শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন।

শিক্ষকদের চার দফা দাবি,
১. সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেট প্রকাশ।
২. বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার শূন্য পদে দ্রুত নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন কার্যকর করা।
৩. সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রদান।
৪. ২০১৫ সালের আগের নীতিমালা অনুযায়ী সহকারী শিক্ষকদের অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট বহাল রেখে গেজেট প্রকাশ।

নীলফামারী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘সরকার দাবি মেনে নিলে শুক্রবার ও শনিবার ছুটির দিনেও পরীক্ষা নিতে পারব। ডিসেম্বরের মধ্যেই ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে। কিন্তু দাবিগুলো পূরণ না হলে কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষিকা জানান, ‘আমরা আন্দোলন করতে চাই না। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানো হলেও সরকার কর্ণপাত করছে না। দাবি বাস্তবায়ন হলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগের মতো চলবে।’

কর্মবিরতির কারণে জেলার অন্যান্য বিদ্যালয়েও পরীক্ষার সময়সূচি অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা দ্রুত সংকট সমাধানে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top