মোঃ ফাহিম,পবিপ্রবি প্রতিনিধি:
দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি)। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি অনুষদের মধ্যে এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন (এএনএসভিএম) অনুষদে ভর্তি হয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষার্থী—১৩৭ জন। অথচ এই অনুষদের শ্রেণিকক্ষের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের রয়েছে তীব্র অভিযোগ।
শিক্ষার্থীরা জানান, ভেটেরিনারি শিক্ষা প্রযুক্তিনির্ভর হলেও শ্রেণিকক্ষে প্রযুক্তির কোনো সুবিধা নেই। অধিকাংশ মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট, আর কোনো ক্লাসরুমেই নেই সাউন্ড সিস্টেম। ফলে মাল্টিমিডিয়া নির্ভর পাঠদান কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।
প্রজেক্টর অকেজো থাকায় স্লাইড, ডায়াগ্রাম ও ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে সাউন্ড সিস্টেম না থাকায় শিক্ষকের লেকচার স্পষ্টভাবে শোনা যায় না, বিশেষ করে পিছনের সারিতে বসা শিক্ষার্থীরা বারবার সমস্যায় পড়েন। গ্রীষ্মকালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, যখন লেকচার শোনার জন্য ফ্যান বন্ধ রাখতে হয়, ফলে ক্লাসরুমে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবি, সরঞ্জাম ত্রুটির বিষয়টি বহুবার ডিন অফিসকে জানানো হলেও সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি হয়েছে। তারা জরুরি ভিত্তিতে ক্লাসরুমে সাউন্ড বক্স স্থাপন এবং নষ্ট প্রজেক্টরগুলো দ্রুত মেরামতের আহ্বান জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী সাইমুন হাসান বলেন,“ভেটেরিনারি শিক্ষা প্রযুক্তিনির্ভর, যেখানে প্রতিটি টপিক বুঝতে প্রজেক্টর ও ভিজ্যুয়াল স্লাইড অত্যন্ত প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের অনুষদে বেশিরভাগ প্রজেক্টর নষ্ট থাকায় এবং সাউন্ড সিস্টেম না থাকায় স্যারদের মাল্টিমিডিয়াতে ক্লাস করাতে বেগ পেতে হয়। এতে করে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বুঝতে কঠিন হয়ে পড়ে। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করুক।”
একই সেশনের অন্য এক শিক্ষার্থী নাজমুল হুদা বলেন,“সাউন্ড সিস্টেম না থাকায় ক্লাসে শিক্ষকের কথা স্পষ্ট শুনতে পারি না। পিছনের বেঞ্চে বসলে অনেক কিছুই মিস হয়ে যায়। পাশাপশি আমাদের দুই একাডেমিক ভবনে পানির ব্যবস্থা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অবস্থা সত্যিই হতাশাজনক।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন,
“মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর আইসিটি সেল সরবরাহ করে। এটার জন্য চাহিদাপত্র দিতে হয়—চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে কি না আমার জানা নেই। তবে চাহিদাপত্র থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন,“ক্লাসরুমের সাউন্ড সিস্টেম বা একাডেমিক ভবনে পানির ব্যবস্থাসহ এসব কাজ আমরা ডিন স্যারদের চাহিদাপত্রের ভিত্তিতেই করি। তারা চাহিদা পাঠালে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেবো। প্রশাসনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো না হলে দূর থেকে এসব সমস্যা বোঝা সম্ভব নয়।”
এ বিষয়ে অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. খোন্দকার জাহাঙ্গীর আলমের সাথে একাধিকবার মুঠুফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।