আদিব হাসান প্রান্ত, সিকৃবি প্রতিনিধি:
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠন ‘বাঁধন’ এর নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল অনুষ্ঠিত সভার মাধ্যমে ২০২৬ সালের জন্য ইউনিটের কার্যক্রম ও নেতৃত্বের দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে। নতুন কমিটিতে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মাহবুব হাসান সৈকত, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেলেন স্বনন সম্যক ধর, এবং জোনাল প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন মিশকাতুল জান্নাত মৌমি। এছাড়া সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আফিফা কবির এবং মো: সিহানুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক রোকসানা আক্তার রিমা, সাংগঠনিক সম্পাদক আজরা আফিয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো: সাকলাইন মোস্তাক স্বাধীন, কোষাধ্যক্ষ মো: নাফিস ইকবাল, দপ্তর সম্পাদক মোছা: জেরিন তাসনিম, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মালিক তানজিম রহমান, তথ্য ও শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক নিয়ামুল হক রোকন।
নির্বাহী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আল সাকিবুল হাসান সার্থক, মোছা: নাজমুননাহার রিয়া, সুপ্রিয়া বিশ্বাস তন্বী, নাঈমা ফাতেমা বুশরা এবং আতিক ইন্তেশিয়ার মেনম।
সভাপতি মাহবুব হাসান সৈকত তার বক্তব্যে বলেন, *“বাঁধন বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন, যা মানুষের প্রাণ বাঁচানোর মূল লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ‘একের রক্ত অন্যের জীবন, রক্তই হোক আত্মার বাঁধন’—এই মূলমন্ত্রের অনুপ্রেরণায় বাঁধন সারা দেশে অসংখ্য রোগীর পাশে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে রক্তদানের মাধ্যমে মানবসেবার একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে। আমরা নিয়মিত রক্তদাতা সংগ্রহ, ব্লাডগ্রুপিং ক্যাম্পেইন, সচেতনতা কার্যক্রম এবং জরুরি রক্তসেবা পরিচালনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মানবিক কাজে সম্পৃক্ত করছি।
সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া আমার কাছে এক সম্মান, দায়িত্ব ও মানবতার প্রতি অঙ্গীকার। আমার মূল লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে: প্রথমত, ইউনিটকে আরও সংগঠিত ও গতিশীল করা। আমরা একটি দ্রুত রেসপন্স টিম গঠন করব, যাতে কোনো মানুষের রক্ত প্রয়োজন হলে তিনি অপেক্ষা না করতে হয়। দ্বিতীয়ত, নতুন রক্তদাতা তৈরিতে বড় পরিসরে সচেতনতা কর্মসূচি গ্রহণ করা। ক্যাম্পাসের প্রতিটি ফ্যাকাল্টি ও হলের মাধ্যমে রক্তদানের ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হবে। তৃতীয়ত, প্রযুক্তিনির্ভর ডাটাবেইস আরও শক্তিশালী করা হবে, যাতে জরুরিভাবে রক্ত প্রয়োজন হলে কয়েক মিনিটের মধ্যে সঠিক গ্রুপের রক্তদাতাকে পাওয়া যায়। চতুর্থত, সামাজিক দায়িত্ববোধ জাগিয়ে তুলতে বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিষয়ক সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং কমিউনিটি সার্ভিস কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা হবে।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাঁধনের কাজে যুক্ত প্রতিটি সদস্য মানবতার সৈনিক। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাঁধন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটকে আরও শক্তিশালী ও মানবিক সেবায় সমৃদ্ধ একটি ইউনিট হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। মানুষের জীবন বাঁচানোই আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন, আর সেই পথেই আমরা এগিয়ে যেতে চাই।”*
সাধারণ সম্পাদক স্বনন সম্যক ধর তার বক্তব্যে বলেন, “একের রক্ত অন্যের জীবন, রক্তই হোক আত্মার বাঁধন”—এই মূলমন্ত্রকে ধারন করে বাঁধন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে আর্ত মানবতার সেবায়। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে জরুরি প্রয়োজনে মুমূর্ষু রোগীর রক্তের চাহিদা মেটাতে কাজ করছে একঝাঁক তরুণ স্বেচ্ছাসেবী। আমরা চাই, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ তার নিজের রক্তের গ্রুপ জানবে এবং স্বেচ্ছায় রক্তদানে এগিয়ে আসবে।”
নতুন কমিটির মাধ্যমে বাঁধন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট আগামী বছরও রক্তদানের প্রচেষ্টা এবং মানবিক কর্মকাণ্ডকে আরও সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।