মোঃ আমিরুল হক, রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
“সব সখিরে পার করিতে নিবো আনা আনা, তোমার বেলায় নিবো সখি তোমার কানের সোনা, সখি গো, আমি প্রেমের ঘাটের মাঝি তোমার কাছে পয়সা নিবো না।” এমন গান কণ্ঠে তুলে মাঝি সাবু মোল্লা খেয়া পারাপার করেছেন কতশত যাত্রী। তারই মুখে উঠে এলো আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেকে নিয়ে কিছু সুন্দর ভাবনার কথা।
নির্বাচন আসলেই প্রার্থীদের নানা প্রতিশ্রুতি। অথচ নির্বাচিত হলে তা বদলে যায়। কিন্তু যাদের মধ্যে বাস্তবতার মিল আছে সেটাকে সামনে রেখে দল বেছে ভোট দিতে হবে। দেশ যাদের হাতে নিরাপদ, যে দলের গ্রহণযোগ্যতা আছে, সেই দলের প্রার্থীকেই ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে হবে। অনেকেই নতুন নতুন এসে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, কিন্তু আমাদের ইতিপূর্বের সরকার পরিচালনা
ও জনগণের জন্য কাজ করেছেন। এমন দলকে ভোট দিতে হবে। তাহলেই দেশের মানুষ নিরাপদ ও উন্নয়নের মুখ দেখবে। আওয়ামী লীগ ১৭ বছর আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। ভোটের দিন কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে দেখি আমার ভোট আগেই দেওয়া হয়েছে। এ রকম পরিস্থিতি আর দেখতে চাই না।
এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন, রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের নারুয়া গড়াই নদীর খেয়াঘাটের মাঝি সাবু মোল্লা।
খেয়াঘাটের মাঝি সাবু মোল্লা বলেন, আজ ২৬ বছর ধরে এই খেয়াঘাটে থেকে মানুষ ও যানবাহন পারাপার করি। ৫০ টাকা বেতন থেকে আজ ৬০০ টাকা বেতন হয়েছে। বাজারে দ্রব্যমূল্যেরও দাম বৃদ্ধি হয়েছে অনেক গুন। কষ্টে চলে আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষের সংসার। তারপরও ভোট দিতে গিয়ে ভুল মানুষকে ভোট দিলে পোস্তাতে হবে। এ কারণে আমাদের মূল্যবান ভোটটি যোগ্য ব্যক্তিকেই দিতে হবে।
তিনি বলেন, রাজবাড়ী-২ আসনে আগে আওয়ামী লীগের সাবেক রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি ও তার লোকজন কি করেছে সবই আমরা জানি। তাদের কর্মের কারণে জনগণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখন বিএনপি-জামায়াতে ইসলামী শক্ত দুটি দল মাঠে কাজ করছেন। দেখতে হবে কে যোগ্য, তাকে ভোট দিতে হবে। যেমন বিএনপি থেকে রাজবাড়ী-২ আসনে এবার মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুন-অর
রশীদ। তিনি দীর্ঘ ১৭টি বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন, বিপদে নেতাকর্মীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। নির্বাচিত হলেও নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের পাশে থাকবেন বলে মনে হয়। এ কারণে সবাই মিলে তাকেই ভোট দিতে হবে।
খেয়াঘাটের মাঝি সাবু মোল্লা বলেন, নতুন যে সরকার আসবে তাদের কাছে আমাদের মতো সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের চাওয়া দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিরোধ, দুর্ণীতি প্রতিরোধ, মাদক নির্মূল, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, এলাকার নানা সমস্যার সঠিক সমাধান করবেন। সাধারণ মানুষ সব সময় রিলিফ, দান, কার্ড, ভাতা, অনুদান চায় না। চায় একটু শান্তি, একটু ভালো থাকা। আশা করি আগামী নিড়বাচনে যে দলই ক্ষমতায় আসবে এসব দিকে নজর রাখবেন।