২৪শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১লা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

আওয়ামী লীগ সরকার রেকর্ড ১০৩ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ রেখে গেছে

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে রেকর্ড বিদেশি ঋণে পড়েছে দেশ। চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত বাংলাদেশের বিদেশি ঋণের স্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৩ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৩৭৮ কোটি মার্কিন ডলার। যা গত মার্চ প্রান্তিক শেষে এর পরিমাণ ছিল ৯৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ৯ হাজার ৯৩০ কোটি ডলার।

সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ৪ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। তবে গত বছরের ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ১০০ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার। তার আগে গত বছরের জুন প্রান্তিক প্রান্তিক শেষে এর পরিমাণ ছিল ৯৮ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুনে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতেরই বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। জুন শেষে সরকারের বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার বা ৮ হাজার ৩২১ কোটি ডলার। গত মার্চ প্রান্তিক শেষে এর পরিমাণ ছিল ৭৯ বিলিয়ন বা ৭ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। সে হিসাবে তিন মাসে ৪ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার। গত ডিসেম্বর শেষে এর পরিমাণ ছিল ৭৯ দশমিক ৬৯ বা ৭ হাজার ৯৬৯ কোটি ডলার। গত বছরের জুন প্রান্তিক শেষে এর পরিমাণ ছিল ৭৫ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার।

সরকারের পাশাপাশি অন্য সরকারি সংস্থাগুলোর ঋণের পরিমাণও বেড়েছে। গত তিন মাসে (জুন শেষে) সরকারের সরাসরি নেওয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭১ বিলিয়ন বা ৭ হাজার ১০০ কোটি ডলার। গত মার্চে এর পরিমাণ ছিল ৬৭ দশমিক ৮১ বিলিয়ন বা ৬ হাজার ৭৮১ কোটি ডলার। জুন শেষে সরকারি অন্য সংস্থাগুলোর বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ১৬ বিলিয়ন বা ১ হাজার ২১৬ কোটি ডলার। যা মার্চ প্রান্তিক শেষে ছিল ১১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ১১৮ কোটি ডলার।

অন্যদিকে চলতি বছরের জুন প্রান্তিক শেষে বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৫৭ কোটি ডলার। যা চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক শেষে ছিল ২০ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে বেসরকারি খাতে কিছুটা বেড়েছে। আর গত ডিসেম্বর মাস শেষে ছিল ২০ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার এবং গত বছরের জুনে যা ছিল ২২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার।

তথ্য বলছে, জুন শেষে বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ১ হাজার ১৪০ কোটি ডলারে। যা গত মার্চ শেষে ছিল ১১ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন বা ১ হাজার ১০৪ কোটি ডলার।

এসব ঋণের মধ্যে বাণিজ্যিক ঋণের পরিমাণ ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার বা ৭৬২ কোটি ডলার। মার্চ শেষে এর পরিমাণ ছিল ৭৪৬ কোটি ডলার। বাণিজ্যিক ঋণের বেশিরভাগ বায়ার্স ক্রেডিট, যার পরিমাণ প্রায় ৫৭৬ কোটি ডলার বা ৫ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার।

এছাড়া বিদেশি ব্যাক টু ব্যাক এলসির ঋণ ১০৯ কোটি ডলার এবং ডেফার্ড পেমেন্টের ঋণের পরিমাণ ৭৬ কোটি ডলার। যদিও জুন শেষে বেসরকারি খাতে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ কমে ৯ দশমিক ১৭ বিলিয়ন বা ৯১৭ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। যা তার আগের প্রান্তিক মার্চ শেষে ছিল ৯ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা গণমাধ্যমকে বলেন, দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বেড়েছে। আমরা মূলত স্বল্পমেয়াদি বেসরকারি ঋণগুলো তদারকি করি। বেসরকারি ঋণগুলো ব্যাংকগুলোই পরিশোধ করে। সাধারণত মাসে ১ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়। এখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তেমন দুশ্চিন্তা থাকে না।

 

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top