১৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

২ তলায় উঠতে ৪০ লক্ষ টাকার লিফট; সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিন্দা প্রকাশ

ইমতিয়াজ উদ্দিন, জবি প্রতিনিধি:

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকনিক বিল্ডিং দুই তলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবনে গত অর্থ-বছরে (২০২৪-২৫) এ প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা বরাদ্দের লিফট লাগানোর কাজ করা হচ্ছে। এই ব্যাপারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (২০ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগসংলগ্ন রাস্তার পাশে ভিসি ভবনে লিফট লাগানোর কাজ শুরু হয়।

খননের কাজের ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হলে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ প্রকাশ শুরু হয়।

এই ঘটনায় কেউ সৌন্দর্য নষ্টের কথা বলছেন, কেউ মেস জীবনের কষ্ট ও হল না থাকার ভোগান্তির কথা বলছেন। আবার এটাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিলাসিতা বলেও উল্লেখ করছেন কেউ কেউ।

ক্ষোভ প্রকাশ করে নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড মিউজিক এসোসিয়েশনের অর্গানাইজিং সেক্রেটারি তাকরিম আহমেদ লিখেছেন, “গত ৩টা বছর ধরে ছয়তলায় সিঁড়ি বেয়ে উঠি।
তা-ও দিনে ১০-১২ বার। আমার শিক্ষকরাও সিঁড়িই ব্যবহার করেন। উনাদের লিফট কই? সিনিয়র শিক্ষক আমার বিভাগেও তো আছেন। আর এখানে ভিসি ভবনে দুই তলা বিল্ডিংয়ে লিফট! নাইস না? জগন্নাথের একমাত্র সম্পদ এই সুন্দর বিল্ডিংটার সৌন্দর্যও নষ্ট! এসব অবিচার।”

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি ও আইন ব্যবস্তাপনা বিভাগের এক শিক্ষার্থী লিখেন,”পোলাপানের থাকার মতো হল নাই, খাওয়ার মতো ডাইনিং নাই। আর এদিকে আমাদের ভিসি ভবনের রাজার ছেলেদের ২ তলায় উঠার জন্য লিফট বানাচ্ছেন।”

এ বিষয়ে চিফ ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, “ঢাকার ভেতরে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। সে ক্ষেত্রে উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করতে অনেক সিনিয়র সিটিজেন ও বিদেশি শিক্ষক আসেন। যাদের জন্য সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠা বেমানান দেখায়।”

তাছাড়া সিঁড়ির ধাপগুলো অনেক বড় বড়। সে কারণে লিফট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এই বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম(পিএইচডি) বলেন, “এটা আগেই বাজেট করা ছিল। এটার টাকা অন্য কোথাও লাগানো যাবে না। লিফট মূলত কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ আসেন তাদের জন্য। প্রশাসনিক ভবনে যখন বাইরে থেকে অনেক মেহমান আসে তখন লিফটের ব্যবস্থা থাকলে তাদের দোতলায় উঠতে সুবিধা হবে। যেমন : ইউজিসি চেয়ারম্যান এলে তাকে আমি আমার রুমে নিতে পারিনি।”

তিনি আরো জানান, “আমি ব্যক্তিগতভাবে লিফট লাগানোর বিষয়ে অনিচ্ছুক ছিলাম। যদি শিক্ষার্থীরা লিফট না লাগাতে চাই, তাহলে প্রশাসন থেকে লিফট লাগাবে না। আমি বলেছিলাম লিফট লাগানোর যে বরাদ্দ করেছিলো সেটা অন্যত্র স্থানে খরচ করতে কিন্তু বলা হয়েছে ওই টাকা অন্য খাতে ব্যয় করা যাবে না।”

লিফট লাগানোর বিষয়ে জবির অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মুরসালিন জয় বলেন, “যেখানে জবি শিক্ষার্থীরা ৭-৮ তলা ভাড়া বাসাতে করুণ জীবন- যাপন করছে, সেখানে দুই তলা ভবনের জন্য লিফটের ব্যবস্থা করা জবি প্রশাসনের বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই নয়! আমি ব্যক্তিগতভাবে যদি প্রশাসনের শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ না করার জন্য ধিক্কার জানাই।”

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top