নিজস্ব প্রতিবেদক:
চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে টানা শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) থেকে এ কর্মসূচি শুরু হবে এবং শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত চলবে।
সোমবার রাতে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নের রূপরেখা প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে একযোগে শাটডাউন পালন করা হবে।
এর আগে দুই দিনব্যাপী দেশজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল, গণমিছিল ও ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের (আইডিইবি) জেলা কার্যালয়গুলোতে অভিযোগপত্র জমা দেন শিক্ষার্থীরা। ছয় দফা দাবিতে তারা কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিক কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন।
গত ১৬ এপ্রিল রাজধানীর সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। একইদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেন তারা।
এর আগে ১৫ এপ্রিল রাতে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিলেও দাবি বাস্তবায়নে গড়িমসি হলে ফের আন্দোলনে ফেরার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ ছয় দফা দাবির রূপরেখা প্রণয়নে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। এতে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের একজন উপদেষ্টাও সদস্য হিসেবে রয়েছেন। তিন সপ্তাহের মধ্যে রূপরেখা প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কমিটিকে।
কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে। সদস্য হিসেবে রয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. সাব্বির মোস্তফা খান, আইডিইবির সদস্যসচিব প্রকৌশলী কাজী সাখাওয়াত হোসেন, জেডএনআরএফ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল আজিজ, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক, কয়েকটি প্রকল্প পরিচালক এবং কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রধান কার্যনির্বাহী উপদেষ্টা মো. রহমত উল আলম।
এছাড়া, শিক্ষার্থীদের এক প্রতিনিধিদল সোমবার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব খ ম কবিরুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে।
১৬ এপ্রিল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। একই সময় ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান খানকে সরিয়ে দিয়ে উপাধ্যক্ষ শাহেলা পারভীনকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল, মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে গণমিছিল, মানববন্ধন এবং ইনস্টিটিউটের নামফলক লাল কাপড়ে ঢেকে প্রতিবাদ চালিয়ে যান। সর্বশেষ, তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেন দাবি বাস্তবায়নের জন্য।