১৯শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাসের প্রমাণ পেয়েছে পাকিস্তান: আইএসপিআর

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের ওপর হামলার পর ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে দায়ী করার প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা ভারতীয় সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে পরিচালিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অকাট্য প্রমাণ পেয়েছে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বুধবার (৩০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখা আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, বেলুচিস্তানসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ভারত পরিচালিত সন্ত্রাসী তৎপরতার বিষয়টি তদন্তে উঠে এসেছে। সম্প্রতি ‘আব্দুল মজিদ’ নামের এক পাকিস্তানি নাগরিককে ঝিলাম বাস স্ট্যান্ডের কাছ থেকে আটক করা হয়, যিনি ভারতীয় গোয়েন্দাদের দ্বারা প্রশিক্ষিত বলে দাবি করা হয়। তার কাছ থেকে একটি আইইডি, দুটি মোবাইল ফোন, ৭০ হাজার রুপি এবং পরবর্তীতে তার বাড়ি থেকে আরও ১০ লাখ রুপি ও একটি ভারতীয় ড্রোন উদ্ধার করা হয়েছে।

জেনারেল চৌধুরী আরও বলেন, মজিদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর জুনিয়র কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবেদার সুখবিন্দারের, যিনি তাকে নির্দিষ্ট স্থানে আইইডি সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

তিনি জানান, “উদ্ধারকৃত উপকরণসমূহের ফরেনসিক বিশ্লেষণে এমন প্রমাণ মিলেছে, যা নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক সংস্থা যাচাই করতে পারে। এটি ভারতের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসবাদের একটি উদাহরণ মাত্র।”

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়, পহেলগাঁও হামলার পর ভারত কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে দোষারোপ করেছে, যার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা রয়েছে।

উল্লেখ্য, অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ে গত সপ্তাহে এক সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। এরপর ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ এবং পাকিস্তানে নিযুক্ত কূটনৈতিক কর্মী কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়।

এর জবাবে পাকিস্তান ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় এবং প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে জানানো হয়, সিন্ধু পানি চুক্তি বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি—যা একতরফাভাবে বাতিল করা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।

বৈঠকের বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়, “পানির প্রবাহ রোধ যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হবে, যার জবাব দেওয়া হবে জাতীয় শক্তির সব পরিসরে।”

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top