মোঃ নুর আলম পাপ্পু, কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ
অদ্য ০১ মে ২০২৫ এক বুক কান্না নিয়ে বারবার একই কথা বলছিলেন তাহসানের দাদী “ও তো আমাকে কিছু বলেনি, শুধু অভিমান করে চলে গেল। এমনই এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের জন্ম দিল কুষ্টিয়ার খোকসা থানাধীন একতারপুর গ্রামে। মোবাইল ফোনের নেশা এবং তা কেড়ে নেওয়ার কারণে মাত্র ১২ বছরের এক শিশুর ঝরে গেল অকাল প্রয়াণে।
ঘটনাটি ঘটেছে আজ সকাল অনুমান ১২:৩০ থেকে ১২:৪৫ এর মধ্যে। আল নূর তাহসান (১২), ইশ্বরদী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র, নিজ ঘরের জানালার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। জানা যায়, মোবাইলে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করায় দাদী তার মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন। এ নিয়ে অভিমানে সে নিজ ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। কিছুক্ষণ পর দরজা না খোলায় দাদী চিৎকার করলে বাড়ির অন্য সদস্যরা এসে দরজা ভেঙে দেখতে পান, তাহসান জানালার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলছে। দ্রুত খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে খোকসা থানা পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এবং পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা (নং-১১, তাং ০১/০৫/২৫) দায়ের করেছেন তাহসানের বাবা, আল নূর মেহেদী (সাগর)।
মোবাইল আসক্তি একটি নীরব ঘাতক! এই ঘটনাটি শুধুই একটি পারিবারিক ট্র্যাজেডি নয়, এটি আমাদের সমাজের একটি বড়ো সতর্কবার্তা। প্রযুক্তি আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হলেও শিশুদের ক্ষেত্রে এর সীমাহীন ব্যবহার এক ভয়াবহ বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মোবাইল ফোনের প্রতি শিশুর অতিরিক্ত আসক্তি মানসিক চাপ, বিচ্ছিন্নতা এবং সামান্য ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় চরম সিদ্ধান্তের দিকে ঠেলে দিতে পারে—যার বেদনাদায়ক উদাহরণ আজ আমাদের সামনে।
খোকসা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মঈনুল ইসলাম বলেন: “ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।