ইমতিয়াজ উদ্দিন, জবি প্রতিনিধি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির সুযোগ পেয়েও অর্থাভাবে ভর্তি হতে না পারা সেই কুড়িগ্রামের মইনুল হকের ভর্তির ব্যবস্থা করেছেন বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির, জবি শাখা।
জানা যায়, মইনুল হকের বাড়ি কুড়িগ্রামের সীমান্ত ঘেঁষা ফুলবাড়ী উপজেলার সাবেক ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার দোলাটারী গ্রামে। তিনি ২০২২ সালে গংগারহাট এমএএস উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ এবং ২০২৪ সালে ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। অর্থের অভাব সাথে নানা টানাপেড়নের মধ্য দিয়ে ভর্তির জন্য পড়ালেখা করেছেন দেশের বৃহত্তম সাবেক ছিটমহলের এই শিক্ষার্থী।ভর্তি পরীক্ষায় উর্তীর্ণ হয়ে পড়ার সুযোগ পান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে।কিন্তু সেই আনন্দের দিনই রাতের বেলায় মারা যান তার দীর্ঘদিনের অসুস্থ পিতা লুৎফর রহমান। বাবার মৃত্যু ও আর্থিক সংকটে মইনুলের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।
এমন অবস্থায় এই শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র শিবির। শিক্ষার্থী মইনুল হককে ঢাকায় নিয়ে এসে তাঁর ভর্তি কার্যক্রম সহ আবাসন ব্যবস্থার আশ্বাস দেয়া হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে।
মইনুল হক বলেন, “শিবিররসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে আমার সাথে যোগাযোগ করা হয় এবং তারা আমার ভর্তিসহ সকল ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো।আজ ছাত্রশিবির আমার ভর্তির খরচ দিয়ে দিয়েছে।অন্যান্য সংগঠনগুলো নিয়মিত আমার সাথে যোগাযোগ রাখছে।সকলকে অশেষ ধন্যবাদ এভাবে পাশে দাঁড়ানোর জন্য।”
আবাসনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান,” আমি চাচার সাথেই থাকবো। এজন্য আবাসন নিয়ে কোনো কিছু ভাবছি না আপাতত।”
শাখা শিবিরের সেক্রেটারি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশী ইসলামী ছাত্রশিবির সবসময় শিক্ষার্থীদের পাশে থাকে। আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পক্ষ থেকে বিষয়টা সামনে আসার সাথে সাথে তার সাথে এবং তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করি।আমরা অতি দ্রুত তাকে ঢাকায় নিয়ে এসে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করে তার আবাসনের ব্যাবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম।আমরা তার ভর্তির ব্যবস্থা করেছি।পরবর্তীতে তার আবাসনের ব্যবস্থাও করবো ইনশাল্লাহ।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা চাই না অর্থাভাবে বা অন্য কোনো কারণে একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হোক। আমরা আমাদের সাধ্য অনুযায়ী প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থীকে শিক্ষা বৃত্তি দিয়ে থাকি কিন্তু সার্বিক দিক বিবেচনায় আমরা এগুলো গোপন রাখি। তারই ধারাবাহিকতায় এর নিউজ সামনে আসায় আমরা আমাদের সাধ্যমত এই ভাইয়ের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। আশাকরি তিনি সম্মানের সাথে শিক্ষা জীবন শেষ করে অতি দ্রুত দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পারবেন।”