১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বেরোবিতে জুলাই বিপ্লবের সহিংসতায় বিস্ফোরক মামলা, তদন্তে তাজহাট থানা

মাসফিকুল হাসান, বেরোবি প্রতিনিধি:
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরে (বেরোবি) “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন” চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর সংঘটিত সশস্ত্র হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়াসহ ৭১ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেছে। সেই সঙ্গে আরও ৮০ থেকে ১০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. হারুন অর-রশীদের স্বাক্ষরে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তাজহাট থানায় দায়ের করা লিখিত এজাহারে বলা হয়, গত ১১, ১৫ ও ১৬ জুলাই শিক্ষার্থীরা “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন” ব্যানারে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলেন। সেই সময় সরকারদলীয় কিছু নেতার উসকানিতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধভাবে লাঠি, রড, কিরিচ, আগ্নেয়াস্ত্র, ইট-পাটকেল ও হাতবোমা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী মারাত্মকভাবে আহত হন।

এজাহারে পোমেল বড়ুয়াকে প্রধান (১ নম্বর) আসামি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, তার নেতৃত্বেই এই সহিংস হামলা সংঘটিত হয়। এছাড়া, ৩ নম্বর আসামি মাসুদুল খালেদ হাসানের বিরুদ্ধে একজন শিক্ষার্থীকে গলা চেপে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।

এজাহারে অভিযোগ করা হয়, হামলার সময় পুলিশের উপস্থিতি সত্ত্বেও তারা কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। হামলাকারীরা কেবল নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েই থেমে থাকেনি; বরং পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। এতে শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার এবং জীবননিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং দণ্ডবিধির ১৪৩/১৪৭/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/১১৪/৩৪ ধারা এবং ৩ক বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন যুক্ত করে মামলা দায়ের করেছে। প্রশাসন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে রেজিস্ট্রার মো. হারুন অর-রশীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখযোগ্যভাবে, এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আজ (মঙ্গলবার) বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক এলাকা থেকে কর্মচারী মোক্তারুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে তাজহাট থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাজহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোসাদ্দেক হোসেন।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top