নিজস্ব প্রতিবেদক:
সৌদি-আমেরিকা বিনিয়োগ ফোরামে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবকে ‘বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ দেশ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। মঙ্গলবার (১৩ মে) রিয়াদে আয়োজিত এই উচ্চপর্যায়ের ফোরামে দেওয়া বক্তৃতায় ট্রাম্প সৌদি নেতৃত্ব, অর্থনৈতিক রূপান্তর এবং বৈশ্বিক মঞ্চে দেশটির ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
সৌদি গেজেটের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সৌদি নেতাদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, “আপনারা বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ দেশ। রিয়াদ একটি বৈশ্বিক বাণিজ্য কেন্দ্র হয়ে উঠবে। মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ এখান থেকেই শুরু।”
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে ‘দিন-রাত পরিশ্রমী নেতা’ হিসেবে বর্ণনা করে ট্রাম্প বলেন, “তিনি এতটাই পরিশ্রম করেন— আমার মনে হয়, তিনি রাতে ঘুমান না।”
ট্রাম্প আরও বলেন, যুবরাজ মোহাম্মদ ও বাদশাহ সালমানের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্যে ‘গভীর ও যুগান্তকারী পরিবর্তন’ এসেছে, যা ইতিবাচক বার্তা বহন করছে।
নিজের সৌদি সফরকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, “সৌদি আরবে এমনভাবে স্বাগত পাওয়া আমার জন্য এক বিশাল সম্মানের ব্যাপার।”
তিনি যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও জোরদার করব।”
আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়েও বক্তব্য রাখেন ট্রাম্প। ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনার পথ উন্মুক্ত করতে সৌদি আরবের গঠনমূলক ভূমিকার জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা জানান এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা প্রশমনে কূটনীতির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ইরান প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, “আমি ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে চাই, যাতে বিশ্বকে আরও নিরাপদ করা যায়।”
একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত ঘোষণায় তিনি জানান, সিরিয়ার ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবেন। এ বিষয়ে সৌদি যুবরাজের সঙ্গে আলোচনার পরই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়েও ট্রাম্প দৃঢ় বার্তা দেন। তিনি বলেন, “আমেরিকা ও তার মিত্রদের হুমকি দিলে কঠোর জবাব দেওয়া হবে। সৌদি আরবের প্রতিরক্ষায় আমি প্রয়োজনে সামরিক শক্তি ব্যবহারে দ্বিধা করব না।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে ট্রাম্প শুধু সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন না, বরং মধ্যপ্রাচ্য ও বৈশ্বিক কূটনীতিতে মার্কিন অবস্থানকেও স্পষ্ট করেছেন।