নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভারতের আধিপত্যবাদী পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই ও বিএনপি নেতা শহিদ ইলিয়াস আলীর গুম ও হত্যার প্রকৃত রহস্য উন্মোচনের দাবি জানিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘ফারাক্কা লংমার্চ দিবস’ (১৬ মে) উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ফারাক্কা, গজলডোবা ও টিপাইমুখসহ ভারতের নির্মিত সকল বাঁধের কারণে গত ৫৪ বছরে বাংলাদেশের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা তুলে ধরে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ আদায়ে উদ্যোগ নিতে হবে।
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মোহাম্মাদ শামসুদ্দীনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম-আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. তোফায়েল হোসেন ও রাজু আহমেদ সদর এবং বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সদস্য সচিব ফজলুর রহমান প্রমুখ।
মোহাম্মাদ শামসুদ্দীন বলেন, ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে পানি লুট করে বাংলাদেশকে মরুভূমিতে পরিণত করার চক্রান্ত চলছে। এই চক্রান্ত প্রতিহত করতে বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান পানি মৈত্রী জোট গঠন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, টিপাইমুখ বাঁধের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ায় সাবেক এমপি ইলিয়াস আলীকে দিল্লির ইশারায় শেখ হাসিনা গুম করেছেন। তার গুমের তদন্ত ও বিচার চাই। ফারাক্কা দিবস জাতীয়ভাবে পালনের দাবিও জানান তিনি।
যুগ্ম-আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব বলেন, ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ ক্ষতির সৃষ্টি হয়েছে। গঙ্গার পানির একতরফা প্রত্যাহারে দেশের কৃষি, বন, শিল্প এবং পরিবেশ ব্যবস্থা ধ্বংস হচ্ছে। তিনি বলেন, ভারতের এই পানি আগ্রাসনের কারণে বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে, তাই আন্তর্জাতিকভাবে ক্ষতিপূরণ আদায় এবং সকল বাঁধ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
মো. তোফায়েল হোসেন বলেন, অভিন্ন নদীর পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, “পদ্মা-তিস্তায় পানি না বইলে, ভারতীয়দের রক্ত বইবে”—এই ভাষায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। একইসঙ্গে সীমান্তে ভারতের পুশইনেরও তীব্র প্রতিবাদ জানান তিনি।
রাজু আহমেদ সদর বলেন, ফারাক্কা লংমার্চের স্মৃতিবাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ আজ ভারতের পানি আগ্রাসনের নির্মম শিকার। দেশের উত্তর, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল মরুভূমির পথে। ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব গালীব ইহসান ও আব্দুস সালাম, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, সহকারী সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া শাখার সদস্য সচিব মো. জিনাত হোসেন ও সহকারী সদস্য সচিব মো. সোহাগ প্রমুখ।