২১শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৭শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

‘তুই টাকার হিসাব দে, বিল ভাউচার দেখা’ – স্কুলে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে অশ্লীল গালাগাল ও হুমকির অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে

 মোঃ নাঈম মল্লিক, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ

ঝালকাঠির নলছিটিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষককে(ভারপ্রাপ্ত )স্কুল চলাকালীন সময় শিক্ষক রুমের সম্মুখে অশ্লীল গালাগাল ও হুমকি- ধামকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত এ বিএনপি নেতা হলেন, সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ. শহিদ হোসেন খান।যদিও ওই বিএনপি নেতা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবক বা কমিটির কোনো সদস্য নন।

বুধবার ২১ মে বিকেল ৩(তিন)টায় উপজেলার পশ্চিম সুবিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এ ঘটনা ঘটে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাদিজা বেগম বৃহস্পতিবার (২২ মে ) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. শহিদ হোসেন খান এদিন বিকাল ৩ টায় স্কুলে আসেন। তিনি  অন্য শিক্ষকদের‌ উপস্থিতিতে  স্কুলের উন্নয়নের জন্য সরকারি বরাদ্দকৃত টাকার হিসাব ও খরচের বিল- ভাউচার দেখতে চান। এ সময় প্রধান শিক্ষক তাকে জানান, এ বছর স্লিপে ভ্যাট দেওয়ার পর ২৯ হাজার টাকা হাতে পেয়েছেন। এ টাকা দিয়ে তিনি স্কুলে রং করণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করেছেন। যা স্কুলের সভাপতি স্যার জানেন। কিন্তু ওই বিএনপি নেতা কিছু শুনতে নারাজ। তিনি প্রধান শিক্ষককে বলেন, তুই টাকার হিসেব দে এবং বিল- ভাউচার দেখা। একই সময় তিনি তাকে বিভিন্ন অশ্লীল গালাগাল করেন এবং মারতে উদ্ধত হন ও হুমকি ধামকি দেন। ওই বিএনপি নেতা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবক বা কমিটির কোনো সদস্য নন। তিনি আমার কাছে কোনো হিসাব চাইতে পারেন না এবং আমার সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণও করতে পারেন না বলেও জানান প্রধান শিক্ষক। কিন্তু তিনি সেটা করেছেন। প্রধান শিক্ষক খাদিজা বেগম আরও জানান, বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিক এ বিদ্যালয়ের সভাপতি সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান স্যারকে জানিয়েছি। নারীর মর্যাদা রক্ষায় আমি প্রশাসন এবং বিএনপির নেতৃবৃন্দের কাছে এর বিচার দাবি করছি।

ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ফাতেমা বেগম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ম্যাডাম ( প্রধান শিক্ষিকা) স্লিপের বরাদ্দের টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কাজ করেছেন । অন্য শিক্ষকরা জানান, বিএনপি নেতা শহিদ খান স্কুলে এসে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা করেন। তবে তারা বিস্তারিত বলতে ভয় পাচ্ছিলেন।

উপজেলা সরকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, বুধবার বিকেলে প্রধান শিক্ষক খাদিজা বেগম কান্নাকাটি করে আমাকে জানিয়েছেন, ওই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাকি স্কুলে গিয়ে বিভিন্ন কাজের হিসাব-নিকাশ চেয়েছেন এবং তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। আমার কাছে ওই প্রধান শিক্ষক তাকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। আমি বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ম্যাডামকে জানানোর জন্য বলেছি।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শিরিন আক্তার বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন।

অভিযুক্ত বিএনপি নেতা শহিদ হোসেন খান বলেন, বিদ্যালয়টি আমার বাড়ির দরজায়। আমিতো সেখানে যাই। ওই প্রধান শিক্ষক যা বলেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট । তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে আছে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top