নিজস্ব প্রতিবেদক:
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা ও আদিতমারী উপজেলার পাঁচটি সীমান্ত দিয়ে এক শিশুসহ ৫৫ জন নারী-পুরুষকে জোরপূর্বক বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। মঙ্গলবার রাত আড়াইটা থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত এসব পুশইনের চেষ্টা চালানো হয়। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও স্থানীয় গ্রামবাসীদের সক্রিয় প্রতিরোধে বিএসএফ তাদের উদ্দেশ্যে সফল হতে পারেনি।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভোরে আদিতমারীর চওড়াটারি সীমান্ত দিয়ে আট মাস বয়সী এক শিশু, ছয়জন নারী ও ছয়জন পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করে বিএসএফ। একই সময় হাতীবান্ধার বনচৌকি সীমান্তে ছয়জন এবং পাটগ্রামের আমবাড়ি, পচা ভাণ্ডার, ধবলগুড়ি ও সফিরহাট সীমান্ত দিয়ে আরও ৩৬ জনকে একইভাবে পাঠানোর চেষ্টা হয়। তবে বিজিবি সদস্যদের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজন সক্রিয়ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুললে বিএসএফ তাদের কার্যক্রম থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আদিতমারীর চওড়াটারি সীমান্তে বিএসএফ ও বিজিবি উভয়পক্ষ রাইফেল তাক করে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পাশে এলাকাবাসীকেও লাঠি হাতে অবস্থান করতে দেখা গেছে। ফলে দিনভর ওই অঞ্চলে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করেছে।
পুশইন ঠেকাতে গিয়ে বিজিবি জানায়, এসব ব্যক্তির ভারতীয় প্যান কার্ড, আধার কার্ড এবং রুপি কেড়ে নিয়েছে বিএসএফ। তারা সবাই ভারতের আসাম রাজ্যের বাসিন্দা এবং বাংলাভাষী মুসলিম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতেও পুশইনের শিকার ব্যক্তিরা নিজেদের ভারতীয় নাগরিক দাবি করে অভিযোগ করেন, তাদের ধর্ম ও ভাষার কারণে বিএসএফ জোর করে বাংলাদেশি বলে বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে।
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদি ইমাম জানান, “সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কোনোভাবেই কাউকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে।”
সীমান্ত পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় বিজিবির পাশাপাশি স্থানীয় গ্রামবাসীরাও এখন সর্তক পাহারায় নিয়োজিত রয়েছে।