মুসলিম দেশগুলো বিশ্ব নেতৃত্বে আসতে পারে: ইরানের প্রেসিডেন্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বিপুল সম্পদ, মানবসম্পদ, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। এসব উপাদান কাজে লাগিয়ে তারা বৈশ্বিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম। সম্প্রতি ওমান টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

মুসলিম বিশ্বকে নিজ অবস্থান গড়ে তোলার আহ্বান

পেজেশকিয়ান বলেন, মুসলিম দেশগুলোর এখন আর অন্যদের নেতৃত্বের অপেক্ষা করে বসে থাকার সময় নয়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের নিজস্ব অবস্থান গড়ে তোলাই এখন জরুরি। “আমরা এক জাতি, এক সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি—আমাদের ঐক্যই আমাদের শক্তি।”

ওমান সফর ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক

সুলতান হাইথামের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রসঙ্গে তিনি জানান, দুই দেশের মধ্যে শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি ও বাণিজ্যসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা বাড়াতে চুক্তি হয়েছে। “আমাদের সম্পর্ক শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসছে—এটি হাজার বছরের বন্ধন।”

পারমাণবিক আলোচনা ও ওমানের মধ্যস্থতা

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান পরমাণু আলোচনায় ওমানের ভূমিকার প্রশংসা করেন ইরানি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, “আমরা কখনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চাইনি এবং ভবিষ্যতেও চাই না। তবে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহারের অধিকার ছাড়ব না।”

ফিলিস্তিন ও গাজা সংকটে জোরালো অবস্থান

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রসঙ্গে মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, “বিশ্ব কি দেখতে পাচ্ছে না—কিভাবে হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস করা হচ্ছে? মুসলিম বিশ্বকে এখন একত্র হয়ে গাজা ও লেবাননের নির্যাতিত মানুষের পক্ষে কথা বলতে হবে।”

নতুন বিশ্বব্যবস্থায় মুসলিমদের ভূমিকা

ইরানী প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমরা মুসলিম দেশগুলোকে একটি নতুন, স্বাধীন বৈশ্বিক কাঠামোতে নিজেদের নেতৃত্ব গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের সম্পদ, প্রতিভা ও ইতিহাস আমাদের সেই শক্তি দেয়।”

যুব সমাজের প্রতি বার্তা

মুসলিম যুবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “জ্ঞান, দক্ষতা ও শিল্পচর্চায় নিজেকে গড়ে তোলো। কুরআনের নির্দেশ অনুযায়ী বিশ্বাস ও নৈতিকতার সঙ্গে এগিয়ে চলো। তোমরাই নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ।”

চীন-রাশিয়ার সঙ্গে ভারসাম্য ও পশ্চিমে দৃষ্টিভঙ্গি

তিনি বলেন, “যারা আমাদের সম্মান করে, আমরা তাদেরও সম্মান করি। পারস্পরিক স্বার্থ ও মর্যাদার ভিত্তিতে আমরা সম্পর্ক গড়তে আগ্রহী—শুধু জায়নিস্ট শাসন ব্যতিক্রম। সেখানে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার।”

পেজেশকিয়ানের এই সাক্ষাৎকারকে ইরানের বর্তমান কূটনৈতিক ও আঞ্চলিক দৃষ্টিভঙ্গির একটি স্পষ্ট বার্তা হিসেবেই দেখছে বিশ্লেষকরা। সূত্র: মেহের নিউজ।