আখলাক হুসাইন, সিলেট জেলা প্রতিনিধি:
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা সহ বিভিন্ন উপজেলায় তিন দিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি হচ্ছে শহরের প্রায় প্রতিটি এলাকায়ও গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ৯ ঘণ্টায় সিলেটে ১২৩ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। এতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
এদিকে সীমান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) যদিও গতকাল বিকাল তিনটা পর্যন্ত দাবি করছিল সিলেটের কোনো নদ–নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। কিন্তু এরপরের অবস্থা আশংকাজনক। পাউবো’র দাবি দুই উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার পাউবো সূত্রে জানা যায়, টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সব নদ–নদীর পানি বেড়েছে। কিন্তু আজ শনিবার প্রতিটি নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। কোম্পানীগঞ্জের ধলাই নদের পানি ইসলামপুর পয়েন্টে গতকাল বেলা তিনটায় ১০ দশমিক ৪২ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেটি ছিল ৭ দশমিক ২৩ সেন্টিমিটার। কিন্তু আজকের চিত্র ভিন্ন। অন্যদিকে গোয়াইনঘাটের ডাউকি নদের পানি জাফলং পয়েন্টে গতকাল বেলা তিনটায় বিপৎসীমার ১ দশমিক ৪৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেটি ছিল বিপৎসীমার ৫ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার নিচে। কিন্তু আজ বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট ও সিলেট পয়েন্টে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের তুলনায় অনেক বেড়েছে। কুশিয়ারা নদীর পানিও ফেঞ্চুগঞ্জ ও শেওলা পয়েন্টে গত দুই দিনের তুলনায় বেড়েছে। গত দুই দিন কোন পয়েন্টেই পানি বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও আজ সেই বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুন্নাহার বলেন, কোম্পানীগঞ্জে পাহাড়ি ঢলের কারণে ধলাই নদরে পানি বেড়েছে এবং বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ জন্য উপজেলার ৩৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি উদ্ধার তৎপরতার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সমন্বয়ে উদ্ধারকারী দলকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
এদিকে গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইনঘাট টু রাধানগর রাস্তা বন্যায় তলিয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের চলাচল ব্যহত হচ্ছে। টানা ভারী বর্ষন এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার নন্দিরগাঁও ইউনিয়ন, তোয়াকুল ইউনিয়ন, লেঙ্গুড়া ইউনিয়ন, পূর্ব আলীরগাঁও ইউনিয়ন, পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল এবং মধ্য জাফলং ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।