২৩শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

জামিনে মুক্ত বেরোবির শিক্ষক মাহমুদুল হক, দুই হত্যা মামলার আসামি হিসেবে ছিলেন গ্রেপ্তার

মাসফিকুল হাসান, বেরোবি প্রতিনিধি:
রংপুরের হাজিরহাট থানায় দায়ের হওয়া দুই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল হক।

রোববার (২২জুন) সন্ধ্যায় তিনি রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। এর আগে বিকেলে রংপুরের যুগ্ম-মহানগর আদালতের বিচারক মার্জিয়া খাতুন তার জামিনের আবেদন শুনানি শেষে চার্জশিট দাখিল না হওয়া পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন। মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে ২ জুলাই।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ২০২৪ সালের ২ আগস্ট সমেস উদ্দিন নামে এক মুদি দোকানির হত্যাকাণ্ডের মামলায় মাহমুদুল হককে তার নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলায় তিনি ৫৪ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে উল্লেখ ছিলেন। পরবর্তীতে আরেকটি মামলায়, ১৮ জুলাই গুলিতে নিহত অটোচালক মানিক মিয়ার হত্যা মামলায়ও (যেখানে তিনি ১৯ নম্বর আসামি) তাকে ‘শ্যোন অ্যারেস্ট’ দেখানো হয়। তার গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।

রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী জানান, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন ব্যক্তি, সংগঠন, এমনকি শিক্ষকরাও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। যেসব ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ ও ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ঘটনায় তদন্তের অংশ হিসেবে অধ্যাপক মাহমুদুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তার মর্যাদা ও সম্মান বিবেচনায় যথাযথভাবে পুলিশ হেফাজতে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।”

এদিকে সমেস উদ্দিন হত্যা মামলায় বাদী আমেনা বেগম অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের ২ আগস্ট সমেস উদ্দিন তার মুদির দোকানে থাকাকালে আন্দোলনকারীরা তাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে রড ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে পুলিশ চলে গেলে তার মরদেহ পাওয়া যায়।

এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমেস উদ্দিনের কবরের পাশে একটি সাইনবোর্ড ভাইরাল হয় যাতে লেখা ছিল, “জাতীয় বীর সমেস উদ্দিন… পুলিশ দেখে দৌড়ে গিয়ে পড়ে যান এবং সেখানেই স্ট্রোক করে মারা যান।” তবে পরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেই সাইনবোর্ডটি আর কবরস্থানে নেই।

তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সকল বিষয় তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।

এছাড়া, মাহমুদুল হকের গ্রেপ্তারের তিন দিনের মধ্যেই হাজির হাট থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুনকে বদলি করে ডিবিতে পদায়ন করা হয়েছে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top