মোঃ শহিদুল ইসলাম পিয়ারুল, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের নান্দাইলে রেল-কর্মকর্তার স্প্যাশাল ট্রেন আটকিয়ে রেলওয়ে কর্মচারী পি-ম্যান উসমান গণির বিরুদ্ধে বিচার চাইল এলাকাবাসী। শনিবার (২৮ জুন) সাড়ে ১২টায় ময়মনসিংহ টু ভৈরব রেলওয়ের নান্দাইল রোড রেলস্টেশনের সামনে লাল কাপড়ের নিশান উড়িয়ে এ ট্রেন থামানো হয়।
এতে রেলওয়ে বিভাগের কর্মকর্তা (ডিআরও) মাইনউদ্দিন সহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ট্রেন থেকে নেমে এলাকাবাসীর অভিযোগ শুনেন এবং পি-ম্যানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সরাসরি অভিযোগ পত্র গ্রহণ করেন।
এসময় এলাকাবাসীর পক্ষে অভিযোগকারী হাসিম উদ্দিন ও বিউটি আক্তার, স্থানীয় বাসিন্দা এহতেশামুল হক শাহীন সহ আরও অনেকের বলেন, নান্দাইল রোড রেলস্টেশনের পি-ম্যান উসমান গণি ও তাঁর তিন ভাই এবং এক বোনের জামাতা রেলওয়ের সরকারি জায়গায় দখলে নিয়ে পাকা ভবন স্থাপনের মাধ্যমে স্থায়ী বসতি করে নিয়েছেন।
রেলওয়ের সরকারি গাছ আত্মসাত ও রেলওয়ের চাকুরির নামে প্রতারণা ও নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। এছাড়া বিগত সরকারের আমলে শ্রমিকলীগের সভাপতি, বর্তমানে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রেলওয়ে কর্মচারী শ্রমিক দলের আহ্বায়ক হয়েছেন।
এ যেন ডিগবাজিতে পাকা খেলোয়াড় উসমান গণি। একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়েও কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে নিয়মিত বেতন ভাতা নিচ্ছে ওই পি-ম্যান। বহাল তবিয়তে আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় পত্র-পত্রিকায় একাধিক সংবাদও প্রকাশ হয়েছে। এসব অভিযোগ শুনে উসমান গণীর বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে রেলকর্মকর্তগণ উপস্থতি সকলকে আশ্বাস প্রদান করে গন্তব্যস্থানের উদ্দেশ্যে ময়মনসিংহ রওয়না হন। এলাকাবাসী আরও জানায়, উসমান গণির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগ পত্র সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে গায়েব করার অশুভ ক্ষমতার রয়েছে।
ফলে ভয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তাই শনিবার এই রেলপথে রেল-কর্মকর্তাগণ স্প্যাশাল ট্রেনে ময়মনসিংহ গমন করবেন বলে জানতে পেরে অভিযোগকারীরা এ বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহন করেন। এদিকে উক্ত ট্রেন যেন এখানে না থামাতে পারে সেজন্য অভিযুক্ত উসমান গণি কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ সহ নান্দাইল মডেল থানা পুলিশকে পূর্বেই অবহিত করেন এবং সুবিচারের জন্য রেলপুলিশ এলাকাবাসীকে আশ্বাসও দিয়েছিলেন।
কিন্তু এলাকাবাসী তা আমলে নেয়নি, তাঁরা ট্রেন থামিয়ে রেল-কর্মকর্তার নিকট বিচার দাবি করেন। তা না হলে পরবর্তীতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে এলাকাবাসী জানায়। কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. লিটন মিয়া বলেন, এখানে আইনশৃঙ্খলার কোন অবনতি যাতে না ঘটে সেজন্য বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে ছিলাম।
এ বিষয়ে রেলওয়ে বিভাগের (ডিআরও) মাইন উদ্দিন বলেন, লাল নিশান দেখে আমরা ট্রেন থামিয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগের কথা শুনি এবং দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করি।