মোঃ আমিরুল হক, রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে পান-সিগারেট ব্যবসায়ী নজরুল বেপারী (৪৫) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। জুয়ার টাকার ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধের জেরে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শরীফ আল রাজীব পিপিএম-সেবা।
তিনি বলেন, “গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামির মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে ১৪টি এবং অন্যজনের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে।”
নিহত নজরুল বেপারী রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং দেশের সর্ববৃহৎ দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে পান ও সিগারেটের দোকান চালাতেন। গত ২৩ জুন রাত ১২টার দিকে দোকান বন্ধ করে দোকানের চাবি নিয়ে বের হন নজরুল মন্ডল। এরপর আর বাড়ি ফেরেননি। পরদিন ভোরে উত্তর দৌলতদিয়া ইমান খার পাড়া এলাকায় রেলওয়ে সীমানার পাশ থেকে তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন, রনি মিয়া ওরফে আরমান হোসেন (২২) এবং মো. ইসমাইল মোল্লা ওরফে ঝড়ু (২০)। তারা উভয়েই দৌলতদিয়ার বাসিন্দা। গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের দুটি পৃথক অভিযানে গাজীপুরের শ্রীপুর ও ঢাকার সাভারের রেডিও কলোনি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যায় ব্যবহৃত একটি ধারালো দা, একটি স্টিলের চাকু এবং দুইটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে রেললাইনের পাশের ডোবার পানির নিচ থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব বলেন, “জুয়ার টাকার ভাগাভাগি নিয়ে নজরুল মন্ডলের সাথে আসামিদের পুরনো বিরোধ ছিল। সেই বিরোধ থেকেই পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।” তিনি জানান, নিহত নজরুলের বিরুদ্ধেও জুয়াসহ দুটি মামলা রয়েছে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, এ ঘটনায় আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছে তাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এই মামলার তদন্ত ও অভিযান পরিচালনা করেন রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মোঃ কামরুল ইসলাম-এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু রাসেল, গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রাকিবুল ইসলাম এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) উত্তম কুমার ঘোষ।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কেউই ছাড় পাবে না। গভীর তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে