নিজস্ব প্রতিনিধি:
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম কক্সবাজারে এক সমাবেশে বলেছেন, দেশের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার ও বিচারের জন্য অপেক্ষা করছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “জুলাই মাসেই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করা উচিত। কেউ পিআর বুঝুক বা না বুঝুক, সংস্কার অবশ্যই হবে। কারণ জনগণ সংস্কার চায় এবং এটাই দেশের উন্নতির একমাত্র পথ।”
শনিবার (১৯ জুলাই) কক্সবাজারে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, দেশের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য উচ্চ পর্যায়ে পিআর বাস্তবায়ন এবং নির্বাচন কমিশনসহ সব গুরুত্বপূর্ণ পদে নিরপেক্ষ নিয়োগ নিশ্চিত করতে একটি শক্তিশালী কমিশন গঠন করা জরুরি। সব রাজনৈতিক দলকে তিনি সংস্কারের পক্ষে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানান।
নাহিদ ইসলাম সংস্কারকে জাতীয় স্বার্থে অপরিহার্য হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “সংস্কার কোনো দলীয় ইস্যু নয়, এটি দেশের মৌলিক প্রয়োজন।” তিনি ঘোষণা করেন, “৩ আগস্ট শহীদ মিনারে আমাদের জাতীয় জনসভা অনুষ্ঠিত হবে, যেখান থেকে আমরা জুলাই সনদ আদায় করে নেব ইনশাআল্লাহ।”
কক্সবাজারের অতীত পরিস্থিতি স্মরণ করে এনসিপি নেতা বলেন, “ফ্যাসিস্ট শাসনামলে কক্সবাজার ছিল সন্ত্রাস ও মাদকের অভয়ারণ্য। নারায়ণগঞ্জের মতো এখানেও গডফাদাররা আতঙ্ক সৃষ্টি করত। তবে বর্তমান সরকার সেই অপরাধী চক্রের অবসান ঘটিয়েছে এবং ভবিষ্যতে কাউকে গডফাদার হতে দেওয়া হবে না।”
কক্সবাজারের মানুষের সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নাহিদ বলেন, “জুলাই আন্দোলনে আপনারা রক্ত দিয়েছেন, আপনাদের সন্তানরা প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। এমনকি রোহিঙ্গা যুবক নুর মোস্তফাও এই সংগ্রামে জীবন দিয়েছেন। আমরা তাকে শহীদের তালিকাভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।”
তিনি কক্সবাজারের কৌশলগত গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “কক্সবাজার দেশের উন্নয়নের মূল কেন্দ্রবিন্দু। বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে বাংলাদেশ দ্রুত উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে। আমাদের সমুদ্রশক্তি ও নৌশক্তিকে শক্তিশালী করতে হবে এবং এ লক্ষ্যে কক্সবাজারকে একটি শক্ত ঘাঁটিতে পরিণত করতে হবে।”
সমাবেশে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারীসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন। আগামী জাতীয় গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে শুরু হওয়া পদযাত্রা শহীদ দৌলত ময়দানে গিয়ে সমাবেশে রূপ নেয়।