জাকির হোসেন হাওলাদার, দুমকি ও পবিপ্রবি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শহীদ জিয়াউর রহমান হল-১ অভিমুখে) জাতীয় নেতা শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হকের ম্যুরাল প্রতিকী পাথরের খোদাই করা ছবিটি হঠাৎই উধাও। অভিযোগ উঠেছে-অত:পর সেখানে নার্সারি’র বিজ্ঞাপন লাগিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনদের মন্তব্যে উঠে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি ভিন্ন (প্রতিক্রিয়া আলোচনা ও সমালোচনা) মন্তব্য।
ম্যুরালটির গায়ে নার্সারির বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের ঘটনায় জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়। অনেকেই এ ঘটনাকে জাতীয় ইতিহাস, সংস্কৃতি ও নেতৃত্বের প্রতি এক ধরনের অবজ্ঞা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতা হিসেবে দেখছেন।
শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক ছিলেন, বাংলার কৃষক-মেহনতি মানুষের পক্ষে উচ্চকণ্ঠ একজন নেতা। তাঁর অবদান কেবল ইতিহাসের পাতায় নয়, জাতির চেতনায় গভীরভাবে গেঁথে আছে। তাঁর ম্যুরালকে এভাবে ব্যবহার করাকে অনেকেই ‘দুঃখজনক’, ‘অমার্জনীয়’ এবং ‘প্রশাসনিক ব্যর্থতা’ বলে মন্তব্য করেছেন।
সমালোচকরা-(পবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থী’রা) বলছেন, প্রশাসনের উচিত ছিল ম্যুরালটি অন্যত্র সরিয়ে তার সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখা। জাতীয় নেতার নামে নির্মিত একটি স্থাপনার গায়ে এই ধরনের বাণিজ্যিক প্রচারণা কেবল দৃষ্টিকটুই নয়, বরং জাতীয় চেতনাবোধের পরিপন্থী।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুকতি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) ছাত্রদলের,-সাধারণ সম্পাদক “সোহেল রানা জনি” তার ভেরিফাইড ফেসবুক অফিসিয়াল স্ট্যাটাসে লিখেছেন,-একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কতটা কাণ্ডজ্ঞানহীন হলে এরকম একটা কাজ করতে পারে ভাবুন। শের ই বাংলা এ. কে. ফজলুল হক একজন জাতীয় নেতা। বাংলাদেশের ইতিহাস এর সাথে সরাসরি সম্পর্কিত এই নাম। ম্যুরাল ঢাকার জন্য নার্সারির এড দিতে হবে? প্রশাসন এভাবে না করে বরং তার ম্যুরাল’টি অন্যত্র সরিয়ে নিতে পারতো। এতে করে তার প্রাপ্য সম্মান তাকে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হতো। কিন্তু এধরণের কাজ ঘৃণ্য ও হীনমন্যতার অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকলো। আমরা অবশ্যই এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আর এই কাজের নেপথ্যে যারা রয়েছেন তাদের উপযুক্ত জবাবদিহিতার আওতায় আনা হোক।
উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নাগরিক ও সচেতনমহল থেকে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি উঠেছে। অনেকে বলছেন, এ ধরনের ঘটনা আমাদের শিক্ষিত ও সচেতন সমাজ হিসেবে কতটা পিছিয়ে তা প্রতিফলিত করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক “সরকারি জনতা কলেজে’র” একজন শিক্ষক বলেন-“জাতীয় ইতিহাস ও নেতৃবৃন্দের প্রতি সম্মান রক্ষা করা আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব। সেটি যেন কোনোভাবেই ক্ষুণ্ণ না হয়। দায়িত্বশীলদের উচিত হবে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেওয়া।”
পবিপ্রবি ছাত্রদলের সভাপতি জাহিদ রাতুল শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে- এ প্রতিনিধি’কে বলেন, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক এর ম্যুরাল এর ওপর বিজ্ঞাপনের ব্যানারটি লাগানো একটি নিকৃষ্ট কাজ বলে আমি মনে করছি। সুতরাং শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের ম্যুরালা।’টি রেখে পাশাপাশি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের একটি ম্যুরাল স্থাপনের দাবি পবিপ্রবি ছাত্রদলের। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট (পবিপ্রবি জিয়াউর রহমান হল প্রভোস্ট) প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষা’কে মুঠোফোনে ফোন করা হলে ফোন রিসিভকরেন নি তিনি। এজন্য পবিপ্রবি প্রশাসনের অফিসিয়াল কোন বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।
শিক্ষার্থীরা তবে, (পবিপ্রবির) সাধারণরা বলছেন, দ্রুত তদন্তপূর্বক দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শেরে বাংলার সম্মান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হোক। এমনটাই তাদের দাবি, এ যেন-ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।