নিজস্ব প্রতিনিধি:
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সোমবার (৪ আগস্ট) জুলাই গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান চাঞ্চল্যকর জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শনকালে ‘নো রিলিজ নো ট্রিটমেন্ট’ (মুক্তি নয়, চিকিৎসা নয়) নির্দেশ দিয়েছিলেন, যা তিনি সরাসরি শুনেছেন বলে দাবি করেন।
জবানবন্দিতে ইমরান জানান, ২০২২ সালের ১৯ জুলাই বিজয়নগর পানির ট্যাংক এলাকায় পুলিশের গুলিতে তার বাম হাঁটুর নিচে গুলিবিদ্ধ হয়। পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ বা ২৭ জুলাই শেখ হাসিনা হাসপাতাল পরিদর্শনে এলে তার সঙ্গে কথা বলেন। ইমরান বলেন, “শেখ হাসিনা বুঝতে পেরেছিলেন আমি আন্দোলনকারী। তিনি জিজ্ঞেস করেছিলেন, পুলিশ তোমাকে গুলি করেছে? আমি উত্তর দিই, পুলিশ সরাসরি আমাকে গুলি করেছে।”
সাক্ষী দাবি করেন, হাসপাতাল ত্যাগের সময় শেখ হাসিনা হেল্পডেস্কে ‘নো রিলিজ নো ট্রিটমেন্ট’ নির্দেশ দেন। ইমরান বলেন, “প্রথমে এর অর্থ বুঝতে পারিনি। পরে দেখলাম আমার অস্ত্রোপচার হচ্ছে না, বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে পারছি না। আমার বাবা আমাকে হাসপাতাল থেকে নিতে চাইলেও নিতে পারছিলেন না। তখন বুঝলাম এর অর্থ। আমার পা কেটে আমাকে কারাগারে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।”
ইমরান তার জবানবন্দিতে শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করেন।
এর আগে রোববার (৩ আগস্ট) এই মামলার প্রথম সাক্ষী খোকন চন্দ্র বর্মনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছিল। ট্রাইব্যুনাল আগামী ৬ আগস্ট পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছে।
উল্লেখ্য, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে প্রধান প্রসিকিউটর ও তার দল উপস্থিত ছিলেন, অন্যদিকে শেখ হাসিনার পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। গ্রেফতারকৃত আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।