৯ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৫ই সফর, ১৪৪৭ হিজরি

ঢাবিতে সব ধরনের হল রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা, উত্তাল রাত কাটাল ক্যাম্পাস

নিজস্ব প্রতিনিধি:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলে সব ধরনের প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। শুক্রবার (৮ আগস্ট) মধ্যরাতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হল প্রভোস্টদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিয়ন্ত্রিত থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ রাত ২টা ৫০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করেন।

এই ঘোষণার পর রাত ৩টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যান। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান শেষে তারা হলগুলোতে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন।

এর আগে শুক্রবার সকালে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি প্রকাশের পর থেকেই ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে গত বছরের ১৭ জুলাই থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও ছাত্রদলের এই পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করে। নারী শিক্ষার্থীদের পাঁচটি হলের ছাত্রীরা বিকেল থেকেই হল প্রশাসনের কাছে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ এবং ছাত্রদলের পদপ্রাপ্তদের হল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন।

রাত ১২টা পর্যন্ত আলটিমেটাম দেওয়া হলেও কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় রাত ১টার দিকে রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা হল গেটের তালা ভেঙে বেরিয়ে আসেন। শেখ মুজিবুর রহমান হল, মুহসীন হল, বিজয় ৭১ হল, এ এফ রহমান হলসহ বিভিন্ন হলের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী রাজু ভাস্কর্যে সমবেত হন। সেখানে তারা ‘হল পলিটিক্সের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট একশন’, ‘জেগেছে রে জেগেছে ছাত্র সমাজ জেগেছে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

রাত ১টা ২০ মিনিটে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা এবং উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। তাদের সঙ্গে আলোচনার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব ধরনের হল রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের দ্রুত সিদ্ধান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ঢাবি প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির ভবিষ্যত কী দাঁড়াবে তা নিয়েও নতুন প্রশ্ন তৈরি করেছে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top