মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি:
বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় তিন কোটি মানুষ খাদ্যবাহিত রোগে আক্রান্ত হয় এবং প্রায় দুই লাখ মানুষ নতুন করে ক্যান্সারে ভোগে—এমন তথ্য উঠে এসেছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায়।
কর্মশালায় জানানো হয়, দেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ৭০ শতাংশই নন-কমিউনিকেবল রোগে (যেমন ক্যান্সার, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি) ঘটে। এছাড়া প্রতি বছর ৩৫ হাজার মানুষ সরাসরি খাদ্যবাহিত রোগে মারা যায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে এ মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।
সোমবার (১১আগস্ট) দুপুরে সৈয়দপুরের একটি রিসোর্টে ‘নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কর্মশালা’ আয়োজন করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প। এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই-আলম সিদ্দিকী সভাপতিত্ব করেন এবং প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য আ. ন. ম. নাজীম উদ্দিন।
প্রকল্পের সিনিয়র কনসালট্যান্ট আইয়ুব হোসেন কর্মশালায় প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা শিহাব উদ্দিন কর্মশালা পরিচালনা করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মীর হোসেন।
বক্তারা বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার অভাবে শুধু ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যই নয়, জাতীয় অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নকল, ভেজাল ও অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণের ফলে ডায়রিয়া, হেপাটাইটিস, ক্যান্সারসহ নানা রোগ ছড়িয়ে পড়ে। এ জন্য খাদ্যের উৎপাদন থেকে ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে নিরাপত্তা মান বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।
কর্মশালায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষক, এনজিও প্রতিনিধি, রেস্তোরাঁ মালিক-কর্মচারীসহ প্রায় ১০০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা কর্মশালায় খাদ্যবাহিত রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি, খাদ্য আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন, বাজার তদারকি বৃদ্ধি এবং ভোক্তাদের স্বাস্থ্যকর খাদ্য বেছে নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার ওপর জোর দেন।