তরফদার মামুন, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজার শহরের শমসেরনগর রোডে ব্যবসায়ী শাহ ফয়জুর রহমান রুবেল হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মূল আসামি জুহেল মিয়া ওরফে জুয়েল ওরফে আলিফ (২২) কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রসহ একাধিক আলামত উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত ৭ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিট থেকে ৭টা ৫ মিনিটের মধ্যে শহরের সিএনজি স্ট্যান্ড সংলগ্ন “এফ রহমান ট্রেডিং” নামের হার্ডওয়্যার ও স্টেশনারি দোকানে দুর্বৃত্ত প্রবেশ করে দোকান মালিক শাহ ফয়জুর রহমান রুবেল (৫৫)-কে উপর্যুপরি ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করে। ঘটনার পর নিহতের পরিবার সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে (মামলা নং–১৮, ধারা: ৩০২/৩৪ পেনাল কোড)।
ভিকটিমের পরিচয়
রুবেল মিয়া মৌলভীবাজারের কাদিপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত শাহ আব্দুল গফুরের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে শমসেরনগর রোডে “এফ রহমান ট্রেডিং” নামে হার্ডওয়্যার ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন এবং শ্যামলী আবাসিক এলাকায় পরিবারসহ বসবাস করতেন।
তদন্ত ও গ্রেফতার অভিযান
ঘটনার পর জেলা পুলিশ সুপার এম.কে.এইচ. জাহাঙ্গীর হোসেন, পিপিএম-সেবা’র নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোবেল চাকমা, আবুল খায়েরসহ ডিবি ও সদর থানা পুলিশের একাধিক টিম তদন্তে নামে। ঘটনাস্থল ঘিরে ব্যাপক অনুসন্ধান, প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দি ও ডিজিটাল তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করা হয়।
এরপর শ্রীমঙ্গল উপজেলার লইয়ারকুল গ্রাম থেকে ১৭ আগস্ট দুপুরে মূল আসামি জুহেল মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার হাতে ব্যান্ডেজ থাকার কারণে তাকে শনাক্ত করা সহজ হয়।
আসামির স্বীকারোক্তি
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জুহেল মিয়া জানায়, দীর্ঘদিন ধরে বেকারত্ব ও আর্থিক সংকটে ভুগছিল সে। ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ৭ আগস্ট সন্ধ্যায় ক্রেতা সেজে রুবেল মিয়ার দোকানে প্রবেশ করে। সুযোগ বুঝে দোকানদারকে ভেতরে নিয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে এবং ক্যাশ থেকে প্রায় ১,১০০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
উদ্ধারকৃত আলামত
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো ছুরি, আসামির ব্যবহৃত মাস্ক ও জুতা, রক্তমাখা ২০ টাকার নোট, ‘দি নিউ আরপি হার্ডওয়্যার’ থেকে কেনা ২টি এলবো ও একটি সাসপেনশন গ্লু, দোকানের ক্যাশ কাউন্টার থেকে উদ্ধারকৃত রক্তমাখা ফাইল।