মোঃ বাদশা প্রামানিক ,নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম সাতজান ডাঙ্গাপাড়া ছম্দিরটারি এলাকায় নদীভাঙনের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে স্বেচ্ছাশ্রমে পাইলিংএর মাধ্যমে প্রতিরোধমূলক কাজশুর হয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের শুভউদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত শুক্রবার( ৫ সেপ্টেম্বর) সাতজান ডাঙ্গাপাড়া ছম্দিরটারি এলাকায় নদীভাঙনের স্বেচ্ছা শ্রমে পাইলিং এর নির্মাণের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানটি সকাল থেকেই এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে এক প্রাণবন্ত মিলনমেলায় পরিণত হয়। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, জনপ্রতিনিধি ও পানি উন্নয়ন বিভাগের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,আতিকুর রহমান নির্বাহী প্রকৌশলী, নীলফামারী পানি উন্নয়ন বিভাগ, বাপাউবো। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, নদীভাঙন এখন শুধু একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, এটি গ্রামীণ জীবনের স্থিতি ও উন্নয়নের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এই প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকাবাসীকে দীর্ঘমেয়াদে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই পাইলিং নির্মাণের কাজের মাধ্যমে আমরা পানির গতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব এবং নদীর গতিপথ সঠিকভাবে পরিচালিত হবে।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জুলফিকার রহমান, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী, নীলফামারী পানি উন্নয়ন বিভাগ। তিনি বলেন,
এই প্রকল্পে স্থানীয় জনসম্পৃক্ততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এলাকাবাসীর সহযোগিতার মাধ্যমে এই কাজ সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এডভোকেট নুরুল হক, সাবেক চেয়ারম্যান, নাউতারা ইউনিয়ন পরিষদ। তিনি বলেন,আমাদের এই অঞ্চল বহু বছর ধরে নদীভাঙনের কবলে পড়ে এসেছে। ঘরবাড়ি হারানো, ফসলি জমি বিলীন হওয়া যেন এই জনপদের নিত্যদিনের গল্প হয়ে উঠেছিল। আজকের এই উদ্যোগ আমাদের জন্য এক নতুন ভোরের সূচনা। এজন্য আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
সাতজান এলাকার বাসিন্দা মশিয়ার রহমান বলেন, আমরা অনেক বছর ধরে নদীর ভয়াবহতার সঙ্গে লড়ছি। এখন পাইপলাইনের কাজ শুরু হওয়ায় মনে হচ্ছে, আলোর মুখ দেখতে পারব।
প্রবীণ ব্যক্তি পবন চন্দ্র মেম্বার বলেন,এই প্রকল্প যেন সঠিকভাবে শেষ হয় এবং আমরা যেন আমাদের সন্তানদের জন্য একটা নিরাপদ পরিবেশ রেখে যেতে পারি – এইটাই এখন চাওয়া।
এলাকার সাধারণ জনগণ একত্রিত হয়ে কাজ করেছে। তারা নিজ দায়িত্বে অনুষ্ঠানস্থল প্রস্তুত করেছে, অতিথিদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেছে এবং পুরো আয়োজনকে সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করেছে।
বক্তারা আরো বলেন, এই পাইলিংনির্মাণ প্রকল্প শুধুই একটি উন্নয়নমূলক কাজ নয়, এটি একটি দুর্দশাগ্রস্ত অঞ্চলের মানুষের আশা ও স্বপ্নের প্রতিফলন। যদি সঠিক পরিকল্পনা ও তদারকির মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন করা যায়, তবে এই অঞ্চল নদীভাঙনের কবল থেকে স্থায়ী মুক্তি পেতে পারে। এ উদ্যোগ এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বাসযোগ্যতা ও স্থায়ী নিরাপত্তায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।