নিজস্ব প্রতিনিধি:
দেশকে অস্থিতিশীল করতে নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। গোপন মিশন ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এবার তারা ‘অপারেশন চক্রবাল’ নামে তিন মাস মেয়াদি নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। এর আওতায় ঝটিকা মিছিল, গাড়ি ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ ও বাজারে আগুন ধরানোসহ নানা কর্মকাণ্ড চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। তবে সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিষয়টি জেনে ইতোমধ্যেই পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা ইউনিট প্রশাসন ও বিভিন্ন পেশার আড়ালে থাকা আওয়ামী লীগের ছায়াশক্তি চিহ্নিত করছে। জানা যায়, দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব দেশত্যাগ করলেও অনেক নেতা-কর্মী এখনো আত্মগোপনে থেকে নাশকতার পরিকল্পনায় সক্রিয়। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ছোট ছোট গ্রুপ এসব কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দিচ্ছে। পাশাপাশি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মেও সমর্থকদের সংগঠিত করার চেষ্টা চলছে।
গোয়েন্দা তথ্য বলছে, পলাতক পুলিশ কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভেতরেও বিভাজন তৈরির চেষ্টা চলছে। অপারেশন চক্রবালের লক্ষ্য তিন মাসের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ লাখ লোক ঢাকায় জড়ো করা। রাজধানী ছাড়াও মিরপুর, মোহাম্মদপুর, সায়েন্সল্যাব, জিগাতলা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল ও রাজশাহীতে ছোট ছোট সেল সক্রিয় রয়েছে।
সূত্র জানায়, সিআরআইয়ের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল দিল্লি থেকে এসব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। তার কাছ থেকেই এসেছে ‘অপারেশন চক্রবাল’ পরিকল্পনার ধারণা। দেশে সক্রিয় নেটওয়ার্কে অর্থ পাঠানো হচ্ছে হুন্ডির মাধ্যমে, যা ব্যবহার করা হচ্ছে নাশকতায়।
এদিকে, গত কয়েকদিনে ঢাকাসহ সারাদেশে শতাধিক ঝটিকা মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। ডিএমপির নির্দেশে এসব মিছিল ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভিডিও ফুটেজ দেখে সাবেক এমপিসহ অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গোয়েন্দারা জানান, মিছিলকারীরা বেশিরভাগ সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার না করে সরাসরি বার্তা আদান-প্রদান করছে। এতে গোয়েন্দারা তথ্য সংগ্রহে নতুন কৌশল নিচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করতে আগাম পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ডিএমপির এক উপকমিশনার বলেন, তারা জনবহুল এলাকায় হঠাৎ মিছিল করে দ্রুত সরে পড়ছে, তবে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক বৈঠকে বেআইনি সমাবেশ ও ঝটিকা মিছিল রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকার জানিয়েছে, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে এ ধরনের ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই সফল হতে দেওয়া হবে না।