১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২১শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

শশী থারুরের মন্তব্যের তীব্র জবাব দিলেন ডাকসুর জিএস প্রার্থী মেঘমল্লার বসু

নিজস্ব প্রতিনিধি:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী-সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের বিজয় নিয়ে ভারতের কংগ্রেস নেতা শশী থারুর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তবে তার সেই মন্তব্যের তীব্র জবাব দিয়েছেন ডাকসুর প্রতিরোধ পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী মেঘমল্লার বসু।

বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি দীর্ঘ পোস্টে মেঘমল্লার সরাসরি থারুরকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, “প্রিয় মি. শশী থারুর, হয়তো আমার বার্তা আপনার কাছে পৌঁছাবে না। যদি পৌঁছায়ও, হয়তো গুরুত্ব দেবেন না—আমার ইংরেজি আপনার মতো প্রাঞ্জল নয় বলেই। আমি মেঘমল্লার বসু। সদ্য অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে আমি জিএস পদপ্রার্থী ছিলাম। রাষ্ট্রীয় সংস্থার সম্পৃক্ততা, ক্রমবর্ধমান ইসলামোফ্যাসিস্ট প্রবণতা ও বিপুল অর্থশক্তির বৈষম্যের মাঝেও আমি প্রায় পাঁচ হাজার ভোট পেয়েছি। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করি।”

তিনি আরও লিখেছেন, “আমার ভোটারদের পক্ষ থেকে বলছি—বাংলাদেশে ডানপন্থি রাজনীতি নিয়ে আপনার মন্তব্যের প্রয়োজন নেই। আপনার বিশ্লেষণ সঠিক হলেও তা কেবল জামায়াতেরই উপকারে আসে। আপনার মন্তব্য তাদের প্রচারে রূপ নেয়। অথচ আপনি বিনয় প্রদর্শন করেন না।”

মেঘমল্লার থারুরকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে লিখেছেন, “ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয় আপনাকে কেন এত উদ্বিগ্ন করে? আপনি কি সেই ব্যক্তি নন, যিনি কেরালায় শবরিমালা মন্দিরে প্রবেশাধিকারের প্রশ্নে ডানপন্থি প্রচারণা চালিয়েছিলেন কেবল সিপিআইএম-কে হারানোর জন্য? প্রতিবেশীকে উপদেশ দিতে চাইলে আগে নিজের দেশে হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিস্টদের হারান। একটা প্রবাদ আছে—যারা কাচের ঘরে থাকে, তারা অন্যের ঘরে পাথর ছোড়ে না। যারা তিনবার মোদি-অমিত শাহকে হারাতে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের অন্য দেশের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে মাথা ঘামানোর বিলাসিতা থাকা উচিত নয়।”

ভারতের ভূমিকাকে বাংলাদেশের জন্য ‘বিষাক্ত’ বলে উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, “আপনার মন্তব্যই আসলে শিবিরকে শক্তি জোগায়। যদি হাতে এত অবসর থাকে, আরও স্ট্যান্ড-আপ শো করুন। আগেরটাই যথেষ্ট বিনোদনমূলক ছিল। আমরা আমাদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করব। আশা করি ভারতের জনগণও একদিন হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিস্টদের ভোটে হারাতে পারবে। আমরা বাংলাদেশে ইসলামোফ্যাসিস্টদের প্রতিরোধে জীবন দিতে প্রস্তুত। প্রয়োজনে আমরা একে অপরের সঙ্গে সংহতি জানাব। কিন্তু দয়া করে এই বক্তৃতা বন্ধ করুন। আপনার দেশ আমাদের চেয়ে ভালো নয়।”

এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শশী থারুর লিখেছিলেন, “এটি হয়তো বেশিরভাগ ভারতীয়র নজরে আসেনি, কিন্তু এটি ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ) ও বিএনপির প্রতি মানুষের বিরক্তি বেড়েছে। অনেকে এই দুই দলের বিকল্প হিসেবে জামায়াতকে বেছে নিচ্ছে। ধর্মীয় উগ্রতার কারণে নয়, বরং এজন্য যে দলটি, সঠিক হোক বা ভুল, দুর্নীতি ও কুশাসনে কলঙ্কিত নয়।”

তিনি আরও প্রশ্ন তুলেছিলেন, “এই প্রবণতা ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে কীভাবে প্রতিফলিত হবে? ভারতকে কি তখন প্রতিবেশী হিসেবে জামায়াত সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে?”

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top