নিজস্ব প্রতিনিধি:
গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের আপত্তি সত্ত্বেও কাতারের দোহায় হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। জানা গেছে, মোসাদ স্থল অভিযানের পরিকল্পনা বাতিল করার পরই ইসরাইলি সরকার এই বিমান হামলার সিদ্ধান্ত নেয়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও কয়েকজন মন্ত্রী হামলার পক্ষে অবস্থান নেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ, শিন বেতের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘মেম’ এবং কৌশলগত বিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমার এ হামলার পরিকল্পনায় সমর্থন দেন।
তবে সেনাপ্রধান এয়াল জামির, মোসাদ প্রধান ডেভিড বারনিয়া, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাহি হানেগবি এবং প্রতিরক্ষা মহলের অধিকাংশ কর্মকর্তা এই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার পরামর্শ দেন। তাদের মতে, গাজায় বন্দী জিম্মিদের ফেরত আনার আলোচনাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আলোচনায় যুক্ত এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, “জিম্মি ফেরানোর চুক্তি এখনো টেবিলে রয়েছে, তাই আলোচনার সমাপ্তি না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত।”
এ ছাড়া ইসরাইলের জিম্মি আলোচক দলের প্রধান নিতজান অ্যালনকে এ বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ধারণা করা হয়, তিনি এ পরিকল্পনার বিরোধিতা করতে পারতেন। ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, শেষ পর্যন্ত শিন বেতের একটি কমান্ড সেন্টার থেকে পুরো অভিযান তদারকি করে ইসরাইল বিমান বাহিনী দিয়ে হামলা চালায়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত বছর তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার হত্যার মতো গোপন স্থল অভিযান এবার চালাতে রাজি হয়নি মোসাদ। সংস্থার প্রধান ডেভিড বারনিয়ার মতে, এ ধরনের অভিযান চলমান জিম্মি সমঝোতা আলোচনায় বড় ধরনের বাধা তৈরি করতে পারে এবং কাতার সরকারের সঙ্গে সম্পর্কও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরাইল ১৫টি যুদ্ধবিমান থেকে ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। বিশ্লেষকদের ধারণা, সম্প্রতি হামাসের হামলায় চার ইসরাইলি সৈন্য নিহত হওয়ার প্রতিশোধ হিসেবেই এই হামলা চালানো হয়েছে। তবে এতে হামাসের কোনো শীর্ষ নেতা নিহত হননি।
হামাস জানিয়েছে, হামলার পরও সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত নেতা খলিল আল-হাইয়া এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তা জীবিত আছেন। তবে হামলায় খলিল আল-হাইয়ার ছেলে, একজন কাতারি কর্মকর্তা এবং আরও কয়েকজন নিহত হয়েছেন।