নিজস্ব প্রতিনিধি:
সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে ভাইস-প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু জয়লাভ করেছেন। ছাত্রদল-শিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রভাবশালী প্রার্থীদের পেছনে ফেলে তার এই জয়ে শুরু হয়েছে নানামুখী আলোচনা। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, যেখানে বেশিরভাগ পদে শিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন, সেখানে শীর্ষ পদ ভিপি হিসেবে জিতুর বিজয় সবার নজর কাড়ছে।
জিতু বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং ‘গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’-এর আহ্বায়ক। তিনি জুলাই আন্দোলনের শুরু থেকেই সক্রিয় ছিলেন এবং আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের স্বার্থে সব ধরনের যৌক্তিক দাবিতে প্রথম সারিতে নেতৃত্ব দেন। তার জনপ্রিয়তা মূলত জুলাই আন্দোলনের সময় থেকেই জাবি ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের আগে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু আন্দোলনের শুরুতে ছাত্রলীগের হাতে প্রথম মার খেয়ে আহত হন। পরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক পদ থেকে পদত্যাগ করে ‘গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ নামে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলেন এবং সেখান থেকে বিভিন্ন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন।
জুলাই আন্দোলনে ছাত্রলীগ থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে জিতু বলেন, “জুলাইয়ের প্রথম থেকেই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। দেশের স্বার্থে এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থে বিবেকবোধ থেকে বিদ্রোহ করে আমি সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে অংশ নিই। শিক্ষার্থীরা তখনও আমার পাশে ছিল এবং এখনও আছে।”
জাকসুর ফল ঘোষণার পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নবনির্বাচিত জিএস মাজহারুল স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী প্যানেলের ভিপি জিতুকে আলিঙ্গন করেন এবং পরস্পরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ দৃশ্য দেখে করতালি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
ভিপি জিতু বলেন, “আমরা দেখেছি দলীয় প্রভাবশালী রাজনীতির কারণে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক জীবন বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাব। আমাদের যৌক্তিক অধিকার থেকে আমরা বঞ্চিত ছিলাম। ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে সেই অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য আমরা রাজপথে আন্দোলন করেছি। এখন জাকসুর অফিসিয়াল ফল ঘোষণার মাধ্যমে আমরা সেই অধিকার ফিরে পেয়েছি।”