নিজস্ব প্রতিনিধি:
শ্রীলংকা, বাংলাদেশ ও নেপালে তরুণদের নেতৃত্বে গণবিক্ষোভের মুখে সরকার পতনের ঘটনা ভারতের বিজেপি নেতৃত্বাধীন মোদি সরকারকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। এ ধরনের আন্দোলনের আশঙ্কায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পুলিশ গবেষণা ব্যুরোকে নির্দেশ দিয়েছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা কৌশল নতুনভাবে সাজাতে। এজন্য ১৯৭৪ সাল থেকে গত ৫০ বছরের বড় বিক্ষোভগুলোর গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য মণিপুর ২০২৩ সালের মে মাসে ভয়াবহ জাতিগত সংঘর্ষে কেঁপে ওঠে। কুকি-মেইতেই বিরোধ রক্তক্ষয়ী রূপ নিলে নিহত হন শতাধিক মানুষ, আহত ও বাস্তুচ্যুত হন বহু পরিবার। আজও বহু মানুষ শরণার্থী শিবিরে দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। দীর্ঘদিন শান্তি ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং পদত্যাগে বাধ্য হন এবং পরে সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়।
মুসলিম অধ্যুষিত আসামে সংখ্যালঘু নির্যাতন যেন নিত্যদিনের ঘটনা। পশ্চিমবঙ্গের মতো আসামেও বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমরা চরম অনিশ্চয়তায় বসবাস করছে। প্রায় ৫০ হাজার মুসলিম ইতোমধ্যে ঘরবাড়ি ছাড়া হয়েছেন। অনেকের বাড়িঘর ভাঙচুর ও উচ্ছেদ করা হয়েছে, আর যারা এখনো টিকে আছেন তাদের প্রতিদিন আতঙ্কে কাটাতে হচ্ছে।
এসব প্রেক্ষাপটে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাবেক সভাপতি সিবগাতুল্লাহ সিবগা তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দেন। ১৯ সেপ্টেম্বর দেওয়া সেই পোস্টে তিনি বঙ্গভঙ্গের একটি মানচিত্র শেয়ার করে লেখেন, আসামের মুসলিমরা আজ যেন নিজেদের জন্মভূমিতেই পরবাসী। নাগরিকত্ব নিয়ে প্রতিনিয়ত সন্দেহের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। স্কুল, কলেজ কিংবা বাজার—সব জায়গায় আতঙ্ক নিয়ে জীবন কাটাতে হচ্ছে। তিনি আরও লেখেন, প্রায় ৫০ হাজার মুসলিম ইতোমধ্যে ঘরছাড়া, অনেকের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হয়েছে। আল্লাহর কাছে দোয়া চেয়ে তিনি মজলুমদের সাহস ও শক্তি কামনা করেন।
তার এই পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। পোস্টটি শেয়ার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমানে ফ্র্যাঙ্কলিন কলেজের শিক্ষক মীর সালমান সামিল মন্তব্য করেন, “এই মুহূর্তে শিবিরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্ভবত সিবগাতুল্লাহ। সে বঙ্গভঙ্গের ম্যাপের ছবি শেয়ার করেছে, এটি নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। মনে হচ্ছে তাওয়া গরম করার কাজ শুরু হয়ে গেছে।”