মো.সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি:
জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনসহ পাঁচ দফা দাবির বাস্তবায়নে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে নীলফামারীতে বিশিষ্টজনদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে জেলা শহরের একটি রেস্টুরেন্টের কনফারেন্স কক্ষে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এই মতবিনিময় সভা। এতে শিক্ষক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার এবং সঞ্চালনা করেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক মাওলানা আন্তাজুল ইসলাম।
সভায় বক্তব্য দেন নীলফামারী পৌর জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের অফিস সেক্রেটারি আব্দুল কাদিম, পলিটিক্যাল সেক্রেটারি মনিরুজ্জামান মন্টু, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট আল ফারুক আব্দুল লতিফ, জেলা চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি আব্দুর রউফ, জেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি সালাম হোসেন এবং অতিরিক্ত পিপি এ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন। এছাড়া আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ড. খায়রুল আনাম।
বক্তারা বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ হচ্ছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির নতুন দিকনির্দেশনা। এই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে—যাতে জনগণের প্রকৃত মতামত ও প্রতিনিধিত্ব জাতীয় সংসদে প্রতিফলিত হয়।
তাঁরা পাঁচ দফা দাবির মধ্যে প্রধান হিসেবে উল্লেখ করেন— জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতি চালু, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, সরকারের দুর্নীতি, জুলুম-নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার নিশ্চিত করা,
এবং স্বৈরাচারী শাসনের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪-দলীয় জোটের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার বলেন, “পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে জাতীয় সংসদে সকল দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে। এতে কোনো দল বা ব্যক্তি একচ্ছত্র ক্ষমতার সুযোগ পাবে না। স্বৈরাচার বা কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান ঘটবে, এবং দেশের প্রত্যেক নাগরিকের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে জাতীয় সংসদে।”
তিনি আরও বলেন, দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ পিআর পদ্ধতির নির্বাচনকে সমর্থন করে। এটি গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার একমাত্র কার্যকর উপায়।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আন্তাজুল ইসলাম জানান, “পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে সারাদেশে ১ অক্টোবর থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত গণসংযোগ কর্মসূচি চলছে। এর ধারাবাহিকতায় আগামীকাল রবিবার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। ইতিমধ্যে তৃণমূলে ব্যাপক সাড়া মিলেছে।”
মতবিনিময় সভায় জেলা, উপজেলা ও পৌর জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মী, তরুণ উদ্যোক্তা ও সাংবাদিকবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।