মোঃ নুর আলম পাপ্পু, খোকসা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় এক নির্মাণাধীন ঘর থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
তিন দিন পর সেই রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ, ইয়াবা সেবন ও টাকার বিরোধকে কেন্দ্র করেই সংঘটিত হয়েছে এ হত্যাকাণ্ড।
গত ১৪ অক্টোবর ২০২৫ (মঙ্গলবার) বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে খোকসা মাঠপাড়া গ্রামের মোঃ জাহিদ শেখ (৩৫) নিজের নির্মাণাধীন আধাপাকা ঘরের পাশে কপির চারা গাছে পানি দিতে যান।
এ সময় তিনি ঘরের ভেতর থেকে তীব্র দুর্গন্ধ পান। পরে ভেতরে প্রবেশ করে দেখেন পলিথিনে মোড়ানো কিছু রাখা আছে, যেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়দের ও খোকসা থানা পুলিশকে খবর দেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পলিথিন মোড়ানো বস্তুটি খুলে দেখতে পান—একজন পুরুষের মরদেহ। মৃত ব্যক্তির পরনে ছিল কালো প্যান্ট ও কালো গেঞ্জি, এবং তিনি বসা অবস্থায় ছিলেন।
পরে বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে মোছাঃ শ্যামলী খাতুন (৩২) মরদেহ শনাক্ত করেন। তিনি জানান, নিহত ব্যক্তি তার স্বামী মোঃ শাহিন হোসেন (৩৫), শাহিন খোকসা বাজারের কাঁচা মালের আড়তে ওজনদার হিসেবে কাজ করতেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শাহিন গত ১২ অক্টোবর দুপুর ১ টার দিকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন। এরপর থেকে তার ফোন বন্ধ ছিল।
মরদেহ উদ্ধারের পর নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে খোকসা থানায় মামলা দায়ের করেন যাহার মামলা নং ০৪, তদন্তে নেমে খোকসা থানা পুলিশ মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে মাত্র একদিনের ব্যবধানে মূল ঘাতককে শনাক্ত করে। ১৬ অক্টোবর মাঠপাড়া গ্রামের ওসমান আলীর ছেলে রাকিবুল ইসলাম ওরফে রাহুল (২১)-কে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ তার কাছ থেকে শাহিনের তিনটি মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ উদ্ধার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে রাহুল জানান, ঘটনার দিন তিনি ও শাহিন একসঙ্গে দুই পিস ইয়াবা সেবন করেন।
পরবর্তীতে টাকা না দেওয়ায় শাহিন তাকে গালাগাল, হুমকি ও থাপ্পর মারেন।
ক্ষিপ্ত হয়ে রাহুল নাইলনের রশি দিয়ে শাহিনের গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে এবং মরদেহ পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় লুকিয়ে রাখে।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারের পর আসামি রাহুল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
বর্তমানে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
খোকসা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মঈনুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত নৃশংস ও পরিকল্পিত ছিল। অল্প সময়েই আমরা হত্যার রহস্য উদঘাটন করে মূল আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। আইনগত প্রক্রিয়া চলছে